এলাকাবাসী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের আশায় বসে থাকেননি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই চৌরাস্তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেছেন।
এই স্থানটিকে পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন স্থানীয় বাসিন্দা ইমাম হোসেন।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, চৌরাস্তাটি ময়লা আবর্জনায় একাকার ছিলো। মুসল্লিরা মসজিদে নামাজ পড়তে এসে দুর্ভোগের শিকার হতেন। আমরা এলাকাবাসী টাকা তুলে এই জায়গা পরিষ্কার করিয়েছি। এখন এখানে আর কোনো দুর্গন্ধ নেইই।
তিনি আরও বলেন, এখানে ময়লা পানি জমেছিল। সামনে বাচ্চাদের স্কুল পাশে মসজিদ। ময়লা জমে থেকে দীর্ঘদিন ধরে যে সমস্যা ছিলো এখন তা আর নেই। এখন সব কিছুই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
প্রতীকী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ঢাকার নাম লিখিয়েছেন বলে জানান তিনি।
শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে সকাল ১০টায় ৩৮ মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ‘পরিচ্ছন্ন ঢাকা’ নামে এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ১ মিনিট পরিচ্ছন্নতাকাজের মধ্য দিয়ে প্রতীকী এ কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের সচেতনতাও কাজ করেছে। সবাই ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের দায়িত্ব নিয়েছেন। একই সঙ্গে মনমানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে, এমন কথাও বলছেন স্থানীয়রা।
লালবাগ কেল্লা এলাকায় এখন পরিচ্ছন্নতার ছাপ। লালবাগের গোড় শহীদ মাজার এলাকাও পরিচ্ছন্ন।
এই স্থানের বাসিন্দারা জানান, মেয়রের একার পক্ষে শহর পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। এই দায়িত্বের অনেকটাই নগরবাসীকে নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে হবে।
পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব মেয়রের একার নয়, বরং সবার একথা উল্লেখ করে এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘য্যামতে খাইলাম ত্যামতে ফালাইলাম এইটা তো করন যাইবো না। কলা খাইলাম কলার সিলকাও ভি (কলার খোসা) রাস্তায় ফালাইলাম, এটা বন(বন্ধ) করতে হইবে। সবাইকে নগর পরিচ্ছন্ন রাখন করতে অইবো, রাখতে অইবো। ’
লালবাগ চৌরাস্তার চারপাশ এখন মোটামুটি বেশ পরিচ্ছন্ন। তবে দুই একটা ঠোঙ্গা বা জঞ্জাল কোথাও কোথাও পড়ে থাকতে দেখা গেছে অবশ্য। এগুলো অসাবধানতাবশত। এমনটাই জানালেন স্থানীয়রা।
লালবাগ চৌরাস্তায় ফল বিক্রি করেন ফারুক হোসেন। ফল বিক্রির জন্য শতশত কাগজের ঠোঙ্গা ব্যবহার করতে হয় তাকে। তবে নিজেই বাদামের ঠোঙ্গাগুলো সাদা বস্তাবন্দি করে রাখেন। এরপরে ময়লার ডাস্টবিনে নিজের হাতে ফেলে দিয়ে আসেন এখন।
ফারুক হোসেন বলেন, এলাকার পরিবেশ এখন বেশ। বেশ ভালোই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বলা যায়। এইজন্য শুধু মেয়রের দিকে চাইয়া থাকলে চলবো না। নিজেগোরও কতগুলো কাজ করতে অইবো। ময়লা জিনিসগুলো যেখানে খুশি ফ্যালান (ফেলা) যাইবো না। ময়লা পরিষ্কারের দায়িত্ব নিজের হাতে নিতে অইবো। তবে কিছু কিছু বেক্কল যত্রতত্র ঠোঙ্গা ফালায়। এইগুলানরে জরিমানা করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের মনও পরিষ্কার রাখতে হবে। মন পরিষ্কার রাখলেই নগর পরিষ্কার হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৮
এমআইএস/জেএম