পাশাপাশি মালবাহী নৌকায় করে এই খেয়াঘাট হয়ে পাট, সরিষা, ভুট্টা, মরিচ, ধান, সারসহ বিভিন্ন মালামাল বহন করেন বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা। এই খেয়াঘাট ঘিরে প্রায় ৩শ’র মতো নৌকা চলাচল করে।
শুক্রবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার মেঘাই খেয়াঘাটে সংশ্লিষ্ট পেশার সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজিমনে দেখা গেছে, নিয়মিত অসংখ্য মানুষের যাতায়াতের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রায় চার মাস আগে এখানে ল্যান্ডিং স্টেশন বসানো হয়েছে। সেখানে দু’টো টয়লেট ও দূর-দূরান্তের যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য একটি বিশ্রামাগার রয়েছে। এজন্য কাউকে টাকা গুণতে হয় না। ল্যান্ডিং স্টেশনের পাশেই ভিড়ানো রয়েছে বড় ও মাঝারি আকারের একাধিক নৌকা।
খেয়াঘাটের চেইন মাস্টার আবু তালহা বাংলানিউজকে জানান, নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নে বাজারের পাশাপাশি বড় হাট রয়েছে। সপ্তাহের শনি ও বুধবার হাটটি বসে। হাটবার প্রচুর লোকজনের সমাগম হয়। হাটের দিনগুলোয় যাত্রীদের চাপটা একটু বেশি থাকে। এদিন গড়ে দেড় হাজারের মতো লোক এই খেয়াঘাট হয়ে আসা-যাওয়া করে। এছাড়া অন্যদিন গড়ে এক হাজার মানুষ যাতায়াত করে এই খেয়াঘাট হয়ে। প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই ঘাট হয়ে নৌকা চলাচল করে।
তিনি আরও জানান, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষ ২৫ টাকা ভাড়ায় নৌকাযোগে যমুনা নদীপথে যাতায়াত করেন। আর মোটরসাইকেলের জন্য ২৫ টাকা ভাড়া দিতে হয়। তবে যমুনার বিভিন্ন চর ঘুরতে আসা বিনোদনপ্রেমী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ নৌকা রিজার্ভ করেন। সারাদিনের জন্য একটি নৌকার বিপরীতে ৮০০-১০০০ টাকা ভাড়া গুণতে হয়।
নূর মোহাম্মদ, কলিম উদ্দিন, আমিনুর রহমানসহ একাধিক নৌকার মালিক ও মাঝি বাংলানিউজকে জানান, প্রত্যেকটি নৌকার পেছনে কমপক্ষে পাঁচজন মানুষ কর্মরত। এছাড়া মেঘাই ও নাটুয়ারপাড়া খেয়াঘাট মিলে আরও ৫শ’ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন।
তারা আরও জানান, বর্ষাকাল এগিয়ে আসছে। সঙ্গে তাদের ঝুঁকিও বাড়ছে। হঠাৎ করে হিংস্র যমুনা রুদ্রমূর্তি ধারণ করবে। নদীর মাঝপথে যাত্রীদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে। কিন্তু তাদের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ব্যাপারে নিরাপত্তা দিতে কেউ এগিয়ে আসেনি। অদূর ভবিষ্যতে কেউ আসবে কি না তাও জানা নেই।
এসব নৌকার মালিক ও মাঝিরা জানান, এক সময় নৌকা চালিয়ে খুব ভালভাবে সংসার চালিয়েছেন। কিন্তু আগের সেই দিন আর নেই। বর্তমানে নৌকার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাদের আয় একেবারে কমে গেছে। বিষয়টি তাদের ভীষণভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। তবে এই মূহুর্তে তাদের কিছুই করার নেই বলেও জানান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৮
এমবিএইচ/আরআর