গত ২১ ফেব্রুয়ারি বাবুগঞ্জের বাহেরচর সাধুকাঠী নদীর চর থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে আব্দুল্লাহ আল আজাদের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছিলো।
বরিশাল নগরের ইনফ্রা পলিটেকনিক কলেজের অটো মোবাইলস-এর সপ্তম সেমিস্টারের ছাত্র মেহেদী হাসান রনি (২৫) তাকে হত্যা করে ড্রামে ভরে ফেলে দেন।
ঘটনার দেড়মাস পরে বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) দিনগত রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্যই জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সহকারী পুলিশ কমিশনার (এয়ারপোর্ট থানা) মো. রকিব হোসেন জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বরিশাল নগরের বৈদ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল আজাদ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় স্বামীকে অপহরণের অভিযোগ এনে ১৬ ফেব্রুয়ারি এয়ারপোর্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী।
এদিকে ঘটনার পর থেকে আজাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার ঝুনুর ব্যবহৃত নম্বরে ফোন করে রনি বিভিন্ন সময় স্বামীকে ফেরত পেতে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে খাদিজা আক্তার ঝুনু বাদী হয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদা দাবি ও অপহরণের অভিযোগ এনে মামলা করেন। স্বামীকে ফেরত পেতে রনির দেওয়া বিকাশ নম্বরে বিভিন্ন সময়ে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন খাদিজা। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।
সর্বশেষ পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইনফ্রা পলিটেকনিক ছাত্র রনিকে সন্দেহজনকভাবে বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর নয়ঘর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা মশিউর রহমান রানার ছেলে। তাকে আটকের পরই জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে আজাদ অপহরণ, হত্যা ও গুমের মূল রহস্য।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফিরোজ আলম মুন্সি গ্রেফতার রনির দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নগরের নথুল্লাবাদ থেকে আব্দুল্লাহ আল আজাদকে কৌশলে অপহরণ করেন রনি। পরবর্তীতে আজাদকে নগরের রূপাতলী এলাকায় বসুন্ধরা হাউজিং এর ভাড়া বাসায় নিয়ে যায় এবং সেখানে হাত-পা বেঁধে জোর করে ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করে আজাদকে ড্রামে ভরে রাখেন।
সুযোগ বুঝে ৭শ’ টাকায় একটি মাহেন্দ্র (থ্রি হুইলার) ভাড়া করে রাতে বাবুগঞ্জ থানাধীন সাধুকাঠী এলাকার নদীর চরে ফেলে দেন।
রনির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ জানায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি বাবুগঞ্জের বাহেরচর সাধুকাঠী নদীর চর থেকে পুলিশ যে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে সেটিই ছিলো আব্দুল্লাহ আল আজাদের। কিন্তু সেটি অজ্ঞাত পরিচয়ে দাফন করা হয়।
রনির দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার নিজ বাড়ির মাইক্রো ওভেনের মধ্য থেকে নিহত আজাদের ব্যবহৃত মোবাইল ও সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
এয়ারপোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) এম আর মুকুল আনোয়ার হোসেন বলেন, আজাদ অপহরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকে আদালতে পাঠানো হবে, সেখানে তিনি জবানবন্দি দেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৮
এমএস/আরআর