মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত স্থানগুলো শনাক্ত করার উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসেবে গত ২১ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ঘোষণা দিয়েছিলেন আগামী ৭ দিনের মধ্যে জিয়াউর রহমানের নাম সরিয়ে ফেলা হবে।
তবে শিশু পার্কের দায়িত্বে থাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগই নেয়নি। নেবেই বা কেমন করে তাদের কাছে যে এখনো সরকারি কোনো নির্দেশনা পৌঁছায়নি।
মন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে, তবে সরেনি শহীদ জিয়ার নাম। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বাংলানিউজকে বলেন, হুট করে চাইলেই তো হবে না। এখানে অনেকগুলো বিষয় আছে। সরকার আমাদের নির্দেশ দিলেই কেবল আমাদের বোর্ড সভায় বিষয়টি উঠবে। সেই সভায় অনুমোদন পেলে আমরা পাঠাবো স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে কিছু প্রসিডিউর আছে, তারপর বাস্তবায়নে যাওয়া যাবে। হুট করে কোনকিছু করার সুযোগ নেই। আমাদের কাছে নির্বাহী কোনো আদেশ আসেনি, একটি রিকুয়েস্ট এসেছে।
আইন অনুযায়ী সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক, ভবন ও স্থাপনার নামকরণ ও পরিবর্তন সংক্রান্ত কাজ করে থাকে কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনা বিভাগ। নামকরণ ও পরিবর্তন সংক্রান্ত এ কাজের জন্য ২০১৪ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রণয়ন করা হয় ‘সিটি করপোরেশনের সড়ক, ভবন ও স্থাপনা নামকরণ নীতিমালা-২০১৪’।
নীতিমালা অনুযায়ী সিটি করপোরেশন এলাকার সড়ক, ভবন ও স্থাপনার নামকরণ পরিবর্তন বা সংশোধনের প্রস্তাব সংস্থার নগর পরিকল্পনা বিভাগে আবেদন আকারে জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। পরবর্তীতে এই প্রস্তাব নামকরণ উপ-কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী নামকরণ উপ-কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্বে থাকেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। সদস্য হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন প্রতিনিধি, জেলা প্রকাশক বা তার প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর, প্রকৌশল বিভাগের প্রধান, সম্পত্তি বিভাগের প্রধান, রাজস্ব বিভাগের প্রধান, সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্বে থাকেন নগর পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান।
কোনো স্থাপনার নাম পরিবর্তন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে ‘নামকরণ উপ-কমিটি’ বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ বা সিদ্ধান্ত অনুমোদনের পর সিটি কপোরেশনের সাধারণ সভায় উপস্থাপন করতে হবে। সাধারণ সভার সুপারিশ বা সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নামকরণ সংশোধন বা পরিবর্তনের প্রস্তাব সরকারের পূর্ব অনুমতির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠাতে হবে। সরকারের অনুমোদন পাওয়ার পর স্থাপনার নামকরণ পরিবর্তন বা সংশোধন প্রস্তাব চূড়ান্ত হবে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালে শহীদ জিয়া শিশু পার্ক স্থাপিত হয়। তবে শিশুদের বিনোদনের জন্য পাবলিক সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম এই শিশু পার্কটি ১৯৮৩ সাল থেকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৮
এসএম/এমজেএফ