ঢাকা, বুধবার, ১২ ভাদ্র ১৪৩২, ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

মেট্রোরেলের কাজে কারো দুর্ভোগ, কারো স্বস্তির পোয়াবারো 

মাসুদ আজীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৪৪, এপ্রিল ৪, ২০১৮
মেট্রোরেলের কাজে কারো দুর্ভোগ, কারো স্বস্তির পোয়াবারো  মেট্রোরেলের কাজ চলছে/ ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: উন্নয়নকাজের ধুম লেগেছে বাংলাদেশে। জনসাধারণ বৃহত্তর সুফল ও সুবিধার আশায় সাময়িক দুর্ভোগ ও অসুবিধা হাসিমুখে তা মেনেও নিচ্ছে। তবে একই পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকরা দুর্ভোগ পোহালেও কারো কারো জন্য তা সুযোগ হয়ে দেখা দিয়েছে।

যেমন, মেট্রোরেলের কাজের কারণে রাজধানীর মিরপুরবাসী অনেকদিন ধরে চরম ভোগান্তিতে থাকলেও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মেট্রোরেলের কাজ শুরু হওয়ায় সুবিধা পাচ্ছে প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন দাবিতে অবস্থানকারী আন্দোলনকারীরা।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মেট্রোরেলের মূল কাজ এখনও শুরু না হলেও রাস্তা খুঁড়ে ওয়াসাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবার লাইন সংস্কার ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু হয়েছে।

মেট্রোরেলের জন্য পিলার বসানোর জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা জরুরি। নয়তো লাইন বিচ্ছিন্ন হতে পারে। এদিকটা মাথায় রেখেই একাজ শুরু হয়েছে।  

আর এই খোঁড়াখুঁড়ির কারণে প্রেসক্লাবের মূল ফটকের সামনের অংশের রাস্তাটি দূ'ভাগে বিভক্ত হয়েছে। যার ফলে যানজটের তীব্রতা বেড়ে গেছে। তাই ভোগান্তিতে আছে এ রাস্তায় চলাচলকারী মানুষ।  মেট্রোরেলের কাজ চলছে/ ছবি: বাংলানিউজঅন্যদিকে রাস্তাটি দূ'ভাগ হয়ে যাওয়ার কারণে প্রতিদিন প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন দাবিতে আসা আন্দোলনকারীরা অবস্থানের জায়গা পাচ্ছেন বেশি। কারণ রাস্তার মাঝখানটা খোঁড়ায় গাড়ি চলাচল করছে একপাশ দিয়ে। আর অপর পাশে শুধু আন্দোলনকারীরা ও সংবাদ সংগ্রহের কাজে থাকা সাংবাদিকরা। সড়কটিতে সবসময় গাড়ির চাপ থাকায় একেবারে ফুটপাত ঘেঁষে দাঁড়াতে হতো আন্দোলনকারীদের। কিন্তু এখন জায়গা নিয়ে আর কোনো সমস্যা নেই।  

জনসংখ্যার অতিরিক্ত চাপের কারণে দিনকে দিন বসবাসের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়া ঢাকা শহরে চলাচলে বিপত্তির এবার যেন ষোলকলা পূর্ণ হয়ে গেছে। এই আক্ষেপ এ রাস্তা ব্যবহারকারী সবারই।  

বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত জিয়াউল হক দিনশেষে কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার সময় রাস্তার এই অংশটিতে এসে তীব্রতর যানজটের কবলে পড়ে আক্ষেপের সুরে এই কথা বলেন।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমার বাসা মিরপুরে। মেট্রোরেলের কারণে রাস্তায় ভোগান্তির যতটুকু বাকি ছিলো তা পূর্ণ হলো প্রেসক্লাবের সামনে এই খোঁড়াখুঁড়ির দিয়ে। শাহবাগের আগ থেকে সংসদ ভবনের মোড় পর্যন্ত রুটিন যানজট থাকে। তারপর আবার শুরু হয় মেট্রোরেলের জন্য রাস্তায় জ্যাম। বাকি ছিলো এ রাস্তাটিই। এখন এখানেও তা শুরু হলো। এ কাজ শেষ হতে অনেকদিন লাগবে জানি। তবে ভালো কাজের স্বার্থে বা ঢাকাকে কিছুটা বসবাস ও চলাচলের যোগ্য করে তোলঅর আশায় এ কষ্টও আপাতত মেনে নিচ্ছি। ‘কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে’—দুর্ভোগ শেষে সুফল ও স্বস্তি আসবে এ আশায়ই আছি।  

বুধবার (৪ এপ্রিল) গার্মেন্টস শ্রমিকদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধনে আসা গার্মেন্টস শ্রমিক আজিজ বলেন, এর আগেও আমরা আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রেসক্লাবের সামনে আমাদের কর্মসূচি পালন করেছি। গাড়ির চাপে আমরা জায়গা কম পেতাম। বিশেষ করে এখানকার পুলিশ সদস্যরা যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য সবাইকে রাস্তা থেকে সরে দাড়াতে বা ফুটপাত ঘেঁষে দাঁড়াতে বলতো। এখন আর রাস্তায় দাঁড়াবার সমস্যা নেই; কেউ এসে বাধাও দেয় না।

গার্মেন্টস শ্রমিকদের এ মানববন্ধনকালে অংশগ্রহণকারীদের বেশ জায়গা দখল করে শান্তিতে, সন্তুষ্টমনে  তাদের কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। আবার রাস্তার এই পাশটিকে সুযোগ বুঝে পার্কিংয়ের স্থান হিসেবেও ব্যবহার করতেও দেখা গেছে অনেককেই।

কথা হয় প্রেসক্লাবের সামনে সদা অবস্থানরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক সদস্যের সঙ্গে।  বাংলানিউজকে তারা বলেন, আমাদের ডিউটি পালনের সময় এই কাজটা এখন কমে গেছে। কেননা এই দিকটায় গাড়ি ঢুকতে পারে না। এমনকি রিকশাও না। তাই এক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণই আমাদের মূল দায়িত্ব।  

মেট্রোরেলের কাজটা বেশ সময়সাপেক্ষ । রাতারাতি শেষ হবারও নয়। তাই অনেকদিন এই দ্বিমুখী সুবিধা-অসুবিধার চিত্র লক্ষ্য করা যাবে। এটা মেনে নিতে হবে। --এই মন্তব্য করেছেন এ বিষয়ে মতামত প্রদানকারী সবাই।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৮
এমএএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ