এদিকে, ধর্মঘট প্রতিহত করতে মঙ্গলবার (২৭ মার্চ) দুপুরে মানিকগঞ্জ বাস টার্মিনালে জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, অটোটেম্পু ওনার্স গ্রুপ, শ্রমিক, সুশীল সমাজ ও প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় এবং মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম আপেল অভিযোগ করেন, যারা অবৈধভাবে ধর্মঘট আহ্বান করেছে তা প্রতিহত করা হবে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার মাসে যারা ধর্মঘট আহবান করে তারা স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মানিকগঞ্জের পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষমতাসীন দলের এক পক্ষে রয়েছেন মানিকগঞ্জ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক কাজী এনায়েত হোসেন এবং মানিকগঞ্জ শ্রমিক লীগের সভাপতি ও জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বাবুল সরকার।
অপরপক্ষে রয়েছেন মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বাস-মিনিবাস-মাইক্রোবাস-অটোটেম্পো ওনার্স গ্রুপের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক আবদুল জলিল।
বর্তমানে জাহিদুলের পক্ষের লোকজন পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ করছে। গত বছরের ১৩ অক্টোবরের আগে কাজী এনায়েত টিপু ও বাবুল সরকারের লোকজনের নিয়ন্ত্রণে ছিল মানিকগঞ্জের পরিবহন।
সূত্র আরও জানায়, মানিকগঞ্জ বাস টার্মিনাল ‘দখল’ ও ‘চাঁদাবাজির’ প্রতিবাদে এবং পাঁচ দফা দাবি আদায়ে বুধবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকে মানিকগঞ্জ-ঢাকা রুটে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।
ঢাকার গাবতলী বাস-মিনিবাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন এ ধর্মঘট আহ্বান করে। গত ১০ মার্চ গাবতলী টার্মিনাল ভবনে সংগঠনটির কার্যালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিষদের আহ্বায়ক মুজিব সারোয়ার ও সদস্য সচিব আমান উল্লাহসহ সংগঠনের নেতারা ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনের নেতারা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ধর্মঘটের আহ্বান জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানিকগঞ্জের একজন প্রভাবশালী নেতার ছত্রচ্ছায়ায় বহিরাগত ও সন্ত্রাসীরা মানিকগঞ্জ বাস টার্মিনাল দখল করে পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি করছে। এর প্রতিবাদে ও পাঁচ দফা দাবিতে ২৮ মার্চ ধর্মঘটের আহবান করা হয়।
এদিকে, ধর্মঘটের প্রতিবাদে দুপুরে জেলা বাস টার্মিনালে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করে জাহিদুল ও জলিল।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বলেন, কাজী এনায়েত হোসেন টিপু ও বাবুল সরকার দীর্ঘদিন অবৈধভাবে বিভিন্ন পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি করে আসছিল। এ চাঁদাবাজি বন্ধের নির্দেশ দিলে তারা স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই ইস্রাফিল হোসেন ও তাকে (জাহিদুল) নিয়ে মিথ্যা কুৎসা রটানো করে। অবৈধ এ ধর্মঘট পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা পালন করবে না বলে তিনি দাবি করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
আরআইএস/