ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৭ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

মহান স্বাধীনতা বাঙালির জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:২৮, মার্চ ২৫, ২০১৮
মহান স্বাধীনতা বাঙালির জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন

ঢাকা: ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। বাঙালি জাতির সংগ্রামময় জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন এই দিনটি। এই দিন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত যাওয়ার পর দীর্ঘ ১৯০ বছর উপমহাদেশের মানুষদের ব্রিটিশরা শাসন-শোষণ নির্যাতন করে। এরপর এই নির্যাতনের হাত থেকে উপমহাদেশের মানুষ মুক্তি পেলেও ভ্রান্ত-দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত থেকে আলাদা হয়ে পাকিস্তান নামে একটি অসম রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

বাঙালির জীবনে আবারও নেমে আসে শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতনের খড়গ।

পাকিস্তানের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে আসতেই অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামে বাঙালি জাতি। মহান ভাষা আন্দোলন, ৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং ৭০ এর নির্বাচনসহ দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাতি ৭১ এ উপনীত হয়। আর বাঙালির এই আন্দোলন ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আন্দোলন-সংগ্রামের একপর্যায়ে স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বে আসেন তিনি।    

অপরিসীম সাহস, দৃঢ় চেতনা, মনোভাব ও আপোষহীন নেতৃত্ব পরাধীন বাঙালি জাতিকে সংগ্রামী হওয়ার প্রেরণা যুগিয়ে ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীণ রেসকোর্স) বক্তব্যে বাঙালিদের ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলে। স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে মরণপন সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে শক্তি ও সাহস যুগিয়েছিল। এ ভাষণে তিনি বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার চূড়ান্ত নির্দেশ দেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। আর পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী আলোচনার নামে প্রহসন চালাতে থাকে।

একপর্যায়ে ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ করে। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করে। এই গণহত্যা শুরু হওয়ার পরপরই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। এই ঘোষণায় বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। তাৎক্ষণিক বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়।  

বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সর্বস্তরের জনগণ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী গৌরবোজ্জ্বল সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি বিজয় লাভ করে।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৮
এসকে/এমএফআই/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।