ঢাকা, শুক্রবার, ২১ ভাদ্র ১৪৩২, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

প্রাণের উৎসবে মেতেছে রূপসার দু’পাড়

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:১১, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
প্রাণের উৎসবে মেতেছে রূপসার দু’পাড়

রূপসা নদীর পাড় থেকে (খুলনা): হেমন্তের পশ্চিম আকাশে হেলে পড়া সূর্যটা তেমন তাপ ছড়াতে পারছে না। প্রকৃতি যেন স্নেহের পরশ ছড়িয়ে দিয়েছে।

এমনই পরিবেশে রূপসা নদীর দুই পাড়ে মানুষের মিলন মেলা, আনন্দের উচ্ছ্বাস।  

তরুণ-তরুণী, নারী শিশুসহ সব বয়সীরা উপভোগ করতে এসেছেন গ্রামীণ ফোনের নৌকাবাইচ। কেউ কেউ নৌকা ও ট্রলার ভাড়া করেছেন নদী ঘুরে বাইচ উপভোগ করতে। নৌকাবাইচ উপলক্ষে রূপসা নদীর দু’পাড় এবং আশেপাশের এলাকা যেন মেতেছে প্রাণের উৎসবে।  

কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে কাঙ্ক্ষিত নৌকাবাইচ। আবেগ-উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন আগন্তুকরা। একটু পরেই নৌকাবাইচ হয়ে উঠবে আপামর মানুষের নির্মল আনন্দের উৎস।

নদীমাতৃক বাংলাদেশ নদীর তরঙ্গভঙ্গের সঙ্গে এ মাটির মানুষের আশৈশব মিতালি। বহুকাল আগে থেকেই নদী হয়ে উঠেছে মানুষের প্রাণোচ্ছল ক্রীড়াসঙ্গী। নৌকাবাইচ একটি দৃষ্টিনন্দন রোমাঞ্চমর প্রতিযোগিতা।
 
হারানো ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার চেষ্টায় গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় খুলনার রূপসা নদীতে ২৯ অক্টোবর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হচ্ছে নৌকা বাইচের ১১তম আসর। খুলনার নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আয়োজনে এ বাইচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এবার নৌকাবাইচে ছোট-বড় মোট ২৮টি নৌকা অংশগ্রহণ করছে। এর মধ্যে বড় নৌকা ১৯টি ও ছোট ৯টি।
 
দুপুর আড়াইটায় রূপসা নদীর ১ নম্বর কাস্টম ঘাটে অতিথিরা ফেস্টুন ও বেলুন ওড়ানোর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌকাবাইচের উদ্বোধন করবেন। ১ নম্বর কাস্টম ঘাট থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে খানজাহান আলী সেতুতে (রূপসা সেতু) গিয়ে শেষ হবে।
 
এবার প্রতিযোগিতায় কয়রা, পাইকগাছা, তেরখাদা, কালিয়া, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর ও ফরিদপুর থেকে মোট ২৮টি বাইচ দল অংশগ্রহণ করছেন। নৌকার মাপভেদে বাইচকে দু’টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে বড় দল রয়েছে ১৯ আর ছোট দল রয়েছে নয়টি।

বড় দলের প্রথম বিজয়ীরা পাবেন এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় দল পাবেন ৬০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় দল পাবেন ৩০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে ছোটদলের প্রথম বিজয়ী দল ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় দল ৩০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় দল পাবেন ২০ হাজার টাকা।

নৌকাবাইচ দেখতে আসা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌকাবাইচ লোকায়ত বাংলার লোকসংস্কৃতির একটি অংশ। যাকে আমাদের কাছে তুলে ধরছে গ্রামীণফোন।

তিনি জানান, বন্ধুদের নিয়ে আগেভাগে এসেছেন নৌকাবাইচ দেখতে।  
নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’র প্রধান উপদেষ্টা শেখ আশরাফ-উজ-জামান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই বিনোদনপ্রিয় খুলনাবাসী মেতে উঠেছে প্রাণের উৎসবে।

বাইচ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা সাতটায় রূপসা ফেরিঘাটে প্রতিবারের মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে থাকছেন জনপ্রিয় শিল্পী কর্নিয়া, ক্ষুদে গানরাজ খুলনার রাতুল ও অন্যান্য স্থানীয় শিল্পীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
এমআরএম/এসএইচ

**
গ্রামীণফোনের নৌকাবাইচ উপলক্ষে খুলনায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।