ঢাকা: বাংলাদেশে জমি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝামেলা হয় অজ্ঞতা আর অসচেতনতার কারণে। ফলে দেশে মোট মামলার ৮০ শতাংশ ভূমি সংক্রান্ত বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ।
তিনি বলেন, ভূমির সঙ্গে মামলার একটি সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে, কারণ ভূমির মালিকানা, দখল, হস্তান্তর বা অন্য কোনো বিরোধ দেখা দিলে তা আদালতে মামলা হিসেবে দায়ের করা হয়, যা দেওয়ানি বা ফৌজদারি প্রকৃতির হতে পারে। এ মামলাগুলোর মাধ্যমে জমির আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠা, অবৈধ দখল থেকে মুক্তি বা জমির সঠিক মালিকানা নির্ধারণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন আইন সম্পর্কে ধারণা প্রদান এবং রিট মামলার জবাব প্রেরণ প্রক্রিয়া’ বিষয়ক লার্নিং সেশনে মুখ্য আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। লার্নিং সেশনে মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব থেকে তদুর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন কর্মরত সবার ভূমি আইন জানা জরুরি। এটি সম্পত্তির অধিকার সুরক্ষিত করে, জালিয়াতি ও দখল প্রতিরোধে সাহায্য করে। ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করে এবং সরকারি ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের মতো সুযোগ-সুবিধা পেতে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, জমির মূল্যবৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে অপরিকল্পিত নগরায়ন, আবাসন তৈরি, উন্নয়নমূলক কার্য, শিল্প কারখানা স্থাপন, রাস্তাঘাট নির্মাণ এবং প্রাকৃতিক কারণে, উন্নয়নের প্রয়োজনে প্রতিনিয়তই ভূমির প্রকৃতি ও শ্রেণিগত পরিবর্তন হচ্ছে। দেশের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি জমি, বনভূমি, টিলা, পাহাড় ও জলাশয় বিনষ্ট হয়ে খাদ্য শস্য উৎপাদনের নিমিত্ত কৃষিজমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে এবং পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
সচিব বলেন, ভূমির সঠিক ব্যবহার, ভূমির বৈধ মালিকানা নিশ্চিত করা এবং ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ, অবৈধ দখল, জালিয়াতি ও অবৈধভাবে জমির শ্রেণি পরিবর্তন রোধের লক্ষ্যে ভূমি সংক্রান্ত আইনসমূহ প্রণীত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ভূমি সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য আইনসমূহের মধ্যে রয়েছে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩, স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন ২০১৭ এবং ভূমি সংস্কার আইন, রেজিস্ট্রেশন আইন-১৯০৮, ২০২৩। এছাড়া ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন ২০২৪ (খসড়া) প্রণয়ন করা হয়েছে।
জিসিজি/জেএইচ