ঢাকা, সোমবার, ৩ ভাদ্র ১৪৩২, ১৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

সমকামিতায় বাধ্য করায় যুবককে ঘাড়ে ছুরি মেরে হত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০৪, আগস্ট ১৮, ২০২৫
সমকামিতায় বাধ্য করায় যুবককে ঘাড়ে ছুরি মেরে হত্যা গ্রেপ্তার জহুরুল মুন্সী

ফরিদপুরে সমকামিতায় বাধ্য করায় মো. রেদুয়ান (২৮) নামের এক যুবককে ঘাড়ে ছুরি মেরে হত্যা করেছেন তারই ঘনিষ্ঠজন জহুরুল মুন্সী ওরফে সুলতান জহির (২৫)। পরে মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে লাশের সঙ্গে বালুর বস্তা বেঁধে ফেলে দেন পাশের বিলে।

রোববার (১৭ আগস্ট) রাতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানা এলাকার চারালদিয়া গ্রাম থেকে অভিযান চালিয়ে হত্যার প্রধান আসামি জহুরুল মুন্সীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১০ অধিনায়ক (পরিচালক) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।

র‌্যাব জানায়, নিহত রেদুয়ানের বাড়ি ফরিদপুর সদরপুর থানার বাইশরশী এলাকায়। গত ১৩ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে তিনি মোটরসাইকেল ও আইফোন নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। দিনশেষে বাসায় না ফেরায় তার মা রাবেয়া বেগম (৪৬) খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে থানায় সাধারণ ডায়রি করেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেলের নিখোঁজের পোস্ট দেন।

রোববার দুপুরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ভাঙ্গা থানার চারালদিয়া গ্রামের একটি বিলে ভাসমান মরদেহ দেখে শনাক্ত করেন সেটি তার ছেলে রেদুয়ানের। এ ঘটনায় রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারীর আবেদনের পর র‌্যাব-১০ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তৎপরতায় ওইদিন রাতেই ভাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে জহুরুল মুন্সীকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার বাড়ি থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, রেদুয়ানের ব্যাংক এশিয়া এটিএম কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মানিব্যাগ, জুতা ও রক্তমাখা জামাকাপড় জব্দ করা হয়। এছাড়া তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মাদারীপুরের শিবচরের একটি মাদ্রাসা থেকে ভুক্তভোগীর মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুজ্জামান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জহুরুল মুন্সী হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, রেদুয়ানের সঙ্গে তার পূর্বে সমকামিতার সম্পর্ক ছিল। পরে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলে রেদুয়ান তাকে আবারও বাধ্য করার চেষ্টা করেন এবং সমকামিতার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।

এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৩ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজ বাড়িতে রেদুয়ানকে ছুরি দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করে হত্যা করেন জহুরুল। এরপর লাশ পাশের বিলে ফেলে দেন। পরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে ১৬ আগস্ট রাতে তিনি আবারও বিল থেকে লাশ টেনে এনে জিআই তার দিয়ে দুটি বালুর বস্তা বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে রাখেন। কিন্তু ১৭ আগস্ট দুপুরে স্থানীয়দের চোখে পড়ে গেলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

এসসি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।