ঢাকা, সোমবার, ৩ ভাদ্র ১৪৩২, ১৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

বেতন, কমিশনসহ পাওনা দাবি বিপ্রোপার্টি.কমের ভুক্তভোগীদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৩৫, আগস্ট ১৮, ২০২৫
বেতন, কমিশনসহ পাওনা দাবি বিপ্রোপার্টি.কমের ভুক্তভোগীদের

বেতন-ভাতা ও কমিশনসহ পাওনা টাকার দাবিতে বিপ্রোপার্টি.কম লিমিটেডের শতাধিক ভুক্তভোগী কর্মী রাজধানীতে মানববন্ধন করেছেন। এক বছরের ধরে প্রতিশ্রুতির ভঙ্গ ও আশ্বাসে হতাশ হয়ে এ কর্মীরা নিজ অধিকার আদায়ের জন্য এ প্রতিবাদ কর্মসূচি করেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর শ্রম ভবনের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন প্যানেল কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান।

তিনি বলেন, বিপ্রোপার্টি.কম লিমিটেড একটা রিয়েল এস্টেট সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানি। এই কোম্পানির স্থায়ী-অস্থায়ী প্রায় ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ১২ মাসের বেতন, দুই-তিনটি ঈদের বোনাস, সেটেলমেন্ট ও কমিশনের প্রায় ১০ কোটি টাকা বকেয়া। কোম্পানি আমাদের পাওনা দিচ্ছে না। কোম্পানির মালিকসহ ম্যানেজমেন্টেরের সবাই গত এক বছর ধরে এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় ও আশ্বাস দিচ্ছে। একইসঙ্গে তারা প্রতিশ্রুতিও ভঙ্গ করছে। যে কারণে আমরা মানববন্ধন কর্মসূচিতে করছি।  

মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, এই কর্মসূচিতে এমনও কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন যাদের ফোর্সফুলি ইনস্ট্যান্ট রিজাইন দেওয়া হয়েছে। অনেক ধরনের পেশি শক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যেটা একান্তই আমাদের জন্য কাম্য ছিল না। বিপ্রোপার্টি.কম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক নোজওর্থি একজন অস্ট্রেলীয়। উনার ইন্ধনদাতা বাংলাদেশের ম্যানেজমেন্টের মধ্যে বেশ কয়েকজন। আমাদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব পালন করেছেন কোম্পানির ডিরেক্টর নাহিদ মিয়াজী। এছাড়া জামি, জুবায়ের, অ্যাকাউন্টসের ইমতিয়াজ, ফাহাদ, এইচআরের রাকিব— তারা সমষ্টিগতভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীর পক্ষে কাজ না করে সরাসরি কোম্পানির মালিকের প্রতিনিধি হয়ে আমাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে। তারা বাংলাদেশের কোনো একটা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সেখান থেকে একটা বড় অ্যামাউন্টের টাকা নিয়ে বাইরে পাচার করে দিয়েছে।  

প্যানেল কমিটির এ সদস্য আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, আমাদের চাকরিচ্যুত হওয়ায় অনেকে বাচ্চার দুধ কিনতে পারছেন না। গর্ভবতী স্ত্রীর চিকিৎসা, বাবা-মাকে ওষুধ কিনে দিতে পারছেন না। অনেকের সংসার তছনছ হয়ে গেছে। ছয় মাস ধরে অনেকের চাকরি নাই। বাংলাদেশের বর্তমানে একটা ক্রান্তিকাল চলছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানেই নিয়োগপ্রক্রিয়া ক্ষীণ। অনেকেই আছে কোম্পানি থেকে ১০লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। টাকা না পেয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

বিপ্রোপার্টি.কমের ম্যানেজমেন্টকে হুঁশিয়ার করে মাহবুবুর বলেন, যদি কোনো কারণে আমাদের এই ন্যায্য আদায়ের সুরাহা না হয়, তাহলে এই আন্দোলন আরও কঠিন থেকে কঠিনতম অবস্থানে যাবে। এই মানববন্ধনে তাদের জানিয়ে দিতে চাই। সবার পাওনা টাকা ফিরে না পেলে, সকল ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রম আইনে মামলা করা হবে এবং পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ান অ্যাম্বেসি ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে। প্রয়োজনে সিও মার্ককে বাংলাদেশে আনতে বাধ্য করা হবে।

নাঈম হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী বাংলানিউজকে বলেন, গত ছয় বছর আমি বিপ্রোপার্টি.কমে কাজ করছি। গত ১২ মাসে বেতন, কমিশন মিলিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা কোম্পানি আটকে রেখেছে। কয়েকবার সময় দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো টাকা দেয়নি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হিসেবে এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে গর্ভবতী স্ত্রীর চিকিৎসা করানোর টাকা নাই। এমনকি সংসারের টালমাটাল অবস্থা। এমন অবস্থা চললে আমাদের আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় নাই। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই। আমাদের পাওনা টাকা, ন্যায্য দাবি পূরণ চাই।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল কমিটির সদস্য মো. আলী, ইফতেখার হোসেন, আতিকুর রহমান, মইনুল ইসলাম, গৌরাঙ্গ রায়, অ্যাডভোকেট জসিম মাহমুদ, নাদিম মহিউদ্দিনসহ অন্যান্যরা।

ডিএইবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।