সম্প্রতি বিভিন্ন মহলে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে বাহিনীটির মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান বলেছেন, তারা এ নিয়ে চিন্তা করছেন না, বিষয়টি সরকার দেখবে।
সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন রোধকল্পে বাজার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
র্যাব ডিজি বলেন, আমরা এই মুহূর্তে ব্যস্ত আছি কীভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখব, কিভাবে অপরাধ দমন করব, কীভাবে সাধারণ মানুষকে একটু স্বস্তিতে চলাফেরা করার সুযোগ দেব, যেন তারা ছিনতাইয়ের সম্মুখীন না হয়, চাঁদাবাজের সম্মুখীন না হয়, দস্যুতার সম্মুখীন না হয়, কোনো অপহরণ না ঘটে, এসব নিয়ে।
তিনি বলেন, এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমরা কাজ করছি। এই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করার জন্য আমরা সবচেয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করছি। সুতরাং র্যাব বিলুপ্ত হবে কি হবে না। এই নিয়ে এই মুহূর্তে আমরা কোন চিন্তাভাবনা করছি না। এটি সরকার দেখবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে র্যাব ডিজি বলেন, সামনের নির্বাচনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের দেওয়া হবে বা নির্বাচন কমিশনার আমাদের যে দায়িত্ব দেবে, সেই দায়িত্ব পালন করতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আপনারা ৫ আগস্টের পর এ পর্যন্ত দেখছেন র্যাব কীভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, কোথাও বড় ধরনের ক্রাইম সংঘটিত হলে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে যাই এবং কাজ করি। আমরা মিটফোর্ডের ব্যবসায়ীকে হত্যায় বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। গাজীপুরে যে সাংবাদিক হত্যার ঘটনাটা ঘটলো, এটা আমরাই প্রথম আসামি গ্রেপ্তার করি। পরে পুলিশের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে এ পর্যন্ত আটজন আসামি গ্রেপ্তার করেছি। এই যে আট টুকরা লাশ ফেলে রাখার ক্লুলেস একটা মার্ডার, সেটিও খুব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে আমরা ডিটেক্ট করি এবং তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করি।
এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, কক্সবাজার এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে এবং বিপুল সংখ্যক ইয়াবা উদ্ধার করেছি, অস্ত্র উদ্ধার করেছি। আমরা মনে করি যে, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য, ভালো রাখার জন্য এবং অপরাধ দমন করার জন্য আমরা এখন প্রস্তুত এবং এইভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মনে করি দিন দিন পরিবেশ ভালো হবে এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যে পরিবেশ দরকার যে পরিস্থিতি দরকার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যতটুকু নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার, আমরা ইনশাআল্লাহ সেটি করতে সক্ষম হবো।
৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের উদ্ধার অভিযান চলমান। আমরা চেষ্টা করব এই অভিযান আরও জোরদার করার জন্য। নির্বাচনের আগের লুণ্ঠিত অস্ত্রের যতটা বাকি আছে, তা উদ্ধারের জন্য আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেব।
এর আগে বাজার পরিদর্শনের বিষয়ে এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, নিষিদ্ধ পলিথিন আমাদের পরিবেশের জন্য খুব ক্ষতিকর। আমাদের দেশের ট্রেডিশনাল ক্রাইম হয়তো কোনো ব্যক্তি বা কোন গোষ্ঠীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিন্তু পরিবেশ যদি আমরা নষ্ট করি, পরিবেশের ওপরে যে আক্রমণ, সেটি আমাদের মানবজাতি বা প্রাণীজগতকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তিনি বলেন, আমরা যেন পরিবেশ নষ্ট না করি, আমাদের পরিবেশ যেন ঠিক থাকে সেজন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পলিথিনবিরোধী অভিযানে আমরাও সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছি এবং এই নিষিদ্ধ পলিথিন যেন ব্যবহার না হয়, এটা যেন বন্ধ করা যায়, সেজন্য আমরা একযোগে কাজ করব।
তিনি আরও বলেন, পলিথিন যেখানে তৈরি হয় সেই ফ্যাক্টরিগুলো আমরা খুঁজে বের করে সেগুলোকে বন্ধ করব। এটা যে পরিবহন হয় সেই পরিবহনে আমরা বাধা দেব এবং এইখানে (কারওয়ান বাজার) আসছি মূলত খুচরা লেভেলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন করতে। আমরা যদি মানুষকে সচেতন করতে পারি, তারা যদি নিজেরাই পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করেন, তাহলে একটি পজিটিভ কাজ হবে।
এসসি/আরএইচ