ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর্মকর্তা সেজে অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎকারী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশনস্ ইউনিটের একটি চৌকস দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, তানভির হোসেন দীর্ঘদিন একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করার সুবাদে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ কাঠামো, তথ্য ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সে একটি প্রতারক চক্র গড়ে তোলে এবং সহযোগীদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে প্রতারণার কাজে লিপ্ত হয়। এই চক্রের সদস্যরা নিজেদের কখনো ‘হেড অফ মর্টগেজ অ্যান্ড লোন’, কখনো ‘কমার্শিয়াল ম্যানেজার’ কিংবা ‘ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি)’ পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। এরপর ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে বড় অঙ্কের বীবিমা রিকুইজিশন জমা দেয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশ্বাস স্থাপন করে। তারা মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করত।
কাশেম (ছদ্মনাম) এই প্রতারণার শিকার হয়ে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পল্টন থানার মামলা একটি নিয়মিত মামলা করা হয়। মামলাটির তদন্তভার পায় সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশনস্ ইউনিট। পরে তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একাধিক মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ভুয়া পরিচয়পত্র ও আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা প্রতারণার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আরও একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ সিআইডির কাছে এসেছে, যারা একই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এজেডএস/এএটি