ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২১ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

জুলাই আন্দোলনের ফটোগ্রাফি- গ্রাফিতি প্রদর্শনীর উদ্বোধন

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:০৩, জুলাই ১৭, ২০২৫
জুলাই আন্দোলনের ফটোগ্রাফি- গ্রাফিতি প্রদর্শনীর উদ্বোধন প্রদর্শনীর উদ্বোধন করছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন।

জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মাসব্যাপী ফটোগ্রাফি এবং গ্রাফিতি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে।  

বুধবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রথমেই আমি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। যারা আহত হয়ে চিকিৎসারত আছেন তাদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।

আজকে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি অন্তর্বর্তী সরকারের জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা এবং ‘জুলাই শহীদ দিবস-২০২৫’র সাথে সঙ্গতি রেখে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত মাসব্যাপী ফটোগ্রাফি এবং গ্রাফিতি প্রদর্শনীতে। আজকের এই আয়োজন আমাদের জুলাইয়ের চেতনা ও ঘটনাবলি স্মরণ করিয়ে দেয়। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জোগায়।

এই গ্রাফিতি ও ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী কেবল একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, এর পেছনে রয়েছে একটি স্পষ্ট বার্তা। আমরা চাই না, বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, এই জুলাই আন্দোলনের ঘটনাবলি জাতীয় স্মৃতি থেকে হারিয়ে যাক। আমরা চাই না, সেই ত্যাগ, সেই সাহস, আর সেই সময়ের সত্য ও ঘটনাবলি ভুলে যাক আমাদের আগামী প্রজন্ম। এ আয়োজন তারই এক ক্ষুদ্র কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস- যার মাধ্যমে আমরা চাই মানুষ দেখুক, ভাবুক, প্রশ্ন করুক, এবং মনে রাখুক। আমাদের এই আয়োজনে যুক্ত হবার জন্যে আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমরা সকলেই জানি, জুলাই আন্দোলন সময়ের ব্যবধানে এক সার্বজনীন গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছিল- একটা সময় প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, সরাসরি বা পরোক্ষভাবে, ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন। এটা ছিল একটা নৈতিক আন্দোলন- যা কোনো দল বা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। সাম্য, ন্যায়, মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথযাত্রায় এটি এক অনন্য অধ্যায়। এসব স্মৃতি ধরে রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এই প্রদর্শনী সেই প্রচেষ্টারই অংশ। আমরা চেয়েছি এমন কিছু দৃশ্যমান করে তুলতে, যা মানুষকে ভাবাবে, যা মানুষের মনে গেঁথে থাকবে।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যারা এই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসবেন, তাদের জন্য এই ইতিহাস একটি দর্পণ হয়ে থাকবে। যেন তারা বোঝেন, ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্য কী ছিল, কে কোথায় দাঁড়িয়েছিল, কারা সত্যের পক্ষে কথা বলেছিল, আর শেষ পর্যন্ত কে কতটুকু মূলা দিয়েছিল।
 
পরিশেষে আমি বলবো, আমরা অতীতকে মনে রাখতে চাই দুঃখ নিয়ে নয়, গর্ব নিয়ে। এই গর্ব শুধু ভাষণ বা স্মরণে নয়, বরং প্রাত্যহিক চিন্তায়, দৃষ্টিভঙ্গিতে ও দায়িত্ববোধে প্রতিফলিত হোক- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। জুলাই পুনর্জাগরণ যেন আমাদের সবসময়ই জাগ্রত রাখে।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, পররাষ্ট্র সচিব (পূর্ব) নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

টিআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।