নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান ভূঁইয়া। চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রণাঙ্গনে ছিলেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলানিউজকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন নাহিদ।
আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোথায় ছিলেন, কি করেছেন; এমন প্রশ্নের উত্তরে নাহিদ বলেন, আন্দোলনের শুরুতে জিকু, দোলন, জাকারিয়াসহ নেতৃবৃন্দরা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। ১৮ জুলাই সাইনবোর্ডে আমরা ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে অংশগ্রহণ করি এবং ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নিই। ১৯ জুলাই আমরা সাইনবোর্ডে ও জালকুড়ি এলাকায় অবস্থান নিই। সেসময় মনে হয়েছে মৃত্যু হয়ত আমাদের আশেপাশেই ছিল।
তিনি বলেন, ১৯ জুলাই ছিল শুক্রবার। একটি মসজিদে জুমার নামাজ শেষ হওয়ার পরই সেখানে গুলি করে। এ ঘটনার পর জালকুড়ি ও ভুইগড় এলাকার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। স্থানীয় জনতাকে নিয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা সেই এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এসবি গার্মেন্টসের সামনে আমার থেকে দুই মিটার দূরে এক সহযোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। হঠাৎ বিভিন্ন দিক থেকে গুলি শুরু হয়ে যায়।
নাহিদ আরও বলেন, ২১ তারিখ আমরা সাইনবোর্ড ও সানারপাড় এলাকায় নামি। এসময় সেই এলাকায় র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে। সেদিন অনেক ভাই শহীদ হন। কারফিউ জারির পর আমাকেসহ ছাত্রদল নেতাদের গ্রেপ্তারে প্রশাসন চিরুনি অভিযান চালায়। ২ ও ৩ তারিখ আমরা চাষাঢ়া এলাকায় আন্দোলনে শরীক হই। ৪ আগস্ট দিপু ভূঁইয়ার (কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক) নেতৃত্বে হাজারো মানুষ চাষাঢ়া এলাকায় জমায়েত হয়। সেদিন নতুন কোর্টের সামনে পুলিশের গুলিতে ছাত্রদলের বহু নেতাকর্মী আহত হয়। আমাদের সামনেই গুলিবর্ষণ করেছিল পুলিশ।
৫ আগস্ট আমরা সাইনবোর্ড থেকে মিছিল নিয়ে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত যাই। সেখানে আমাদের টার্গেট করে পুলিশ গুলি করে। অল্প সময়েই সেখানে আমাদের কয়েকজন ভাই শহীদ হয়। এ ঘটনা খুবই হৃদয়বিদারক। আমরা দেখেছি মানুষ কীভাবে শহীদ হয়েছে তবুও দেশকে রক্ষা করতে পিছ পা হয়নি।
এমআরপি/এমজে