ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

ফ্যাসিস্টের দোসররা কতটা ভয়ংকর তা ১৯ জুলাই টের পেয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:০২, জুলাই ১৫, ২০২৫
ফ্যাসিস্টের দোসররা কতটা ভয়ংকর তা ১৯ জুলাই টের পেয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসী নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আহমেদুর রহমান তনু।

২০২৪ সালের ১৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আহমেদুর রহমান তনু। তার ভাষ্যমতে ওই কদিন নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর ছিল।

জেলার বাসিন্দারা আতঙ্ক নিয়ে রাত পার করতেন।  

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলানিউজকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।  

আহমেদুর রহমান তনু বলেন, ১৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর ছিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিতাড়িত ও পলাতক সমর্থকরা কতটা ভয়ঙ্কর ছিল সেটা আমরা ১৯ জুলাই টের পেয়েছি। তারা কী পরিমাণ অস্ত্র নিয়ে নেমেছিল সেটা নারায়ণগঞ্জবাসী দেখেছে। রিয়া গোপও সেদিন মারা যায়। নারায়ণগঞ্জে কেউ স্বস্তিতে ছিল না। প্রতিটি দল, প্রতিটি সেক্টরের লোকজন আতঙ্কে দিন কাটিয়েছে। মানুষ ঘুমাতে পারেনি সে সময়।

তিনি বলেন, আমাদের সবার টার্গেট ছিল দেশটাকে বাঁচাতে হবে। এভাবে চলতে পারে না। আন্দোলনে আমাদের নারায়ণগঞ্জে ৫৭ জন শহীদ হয়। ৩১৫ জন আহত রয়েছে। ৫ আগস্ট সকালেও সাজনু (মহানগর যুবলীগের সভাপতি), সজলরা উত্তর চাষাঢ়ায় গুলিবর্ষণ করে। সেদিন দুপুর পর্যন্ত তারা আক্রমণ করে।

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি তবে তার সাদৃশ্য দেখেছি। সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ সম্পৃক্ত ছিল বলেই ৫ আগস্ট হয়েছে, আমরা নতুন বাংলাদেশ দেখছি। একটা মানুষ একটি দেশে শান্তিতে বাস করবে। নিরীহ মানুষ যেন আইনের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে। একটি দলের স্বার্থে যদি আইন ব্যবহৃত হয়, তাহলে মানুষ কীভাবে বাঁচবে। আইন একটি দলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মানুষকে নির্যাতন করবে এটা তো মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশকে মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের দিকে নিয়ে আসাই আমাদের লক্ষ্য।

আন্দোলনে সাবেক ছাত্রদল নেতা আমানত ৫ আগস্ট ঢাকা যাওয়ার পথে গুলিতে নিহত হন। তার ব্যাপারে তনু বলেন, আমানত আমার ছোটবেলার বন্ধু। আমরা পারিবারিক সদস্যের মতোই ছিলাম। আমার জীবনের অনেক কিছুই ওর সঙ্গে যুক্ত। আমি আর আমানত স্কুল জীবন থেকে এই পর্যন্ত একসঙ্গে ছিলাম। পাঁচ আগস্ট ঢাকা যাওয়ার পথে যাত্রাবাড়ীতে ও শহীদ হয়।

জুলাইয়ের পটভূমি ও আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, ১৪ তারিখ থেকে নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন শুরু হয়। ধীরে ধীরে এটা শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড ও কাঁচপুর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। ধীরে ধীরে যাত্রাবাড়ীর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়তে থাকে। সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে রাস্তা ব্লক করতে থাকে। ফলে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কটা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এটি একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। মন থেকে দেশের জন্য কাজ করা ও জীবন দেওয়া, এমন একটা অবস্থা ছিল যে মানুষ জীবনের পরোয়া করেনি। মানুষ প্রমাণ করেছে যে এই স্বৈরাচার ক্ষমতায় থাকতে পারে না।

এমআরপি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।