ঢাকা, রবিবার, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৭ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

ভারত মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তকে রক্ষা করতে পারে না: প্রেস সচিব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:১৩, জুলাই ৯, ২০২৫
ভারত মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তকে রক্ষা করতে পারে না: প্রেস সচিব ছবিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, ইনসেটে শেখ হাসিনা

ভারতকে বিবেক ও নৈতিকতার স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, এখন আর ভারত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে এমন একজন ব্যক্তিকে রক্ষা করতে পারে না।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুলাই অভ্যুত্থান দমনে নিজে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন, বিবিসির অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে আসার প্রেক্ষাপটে বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শফিকুল আলম এ কথা বলেন।

তিনি তার পোস্টে জানান, বিবিসির ইনভেস্টিগেশনস ইউনিট বিবিসি আই তার অনুসন্ধানে নিশ্চিত করেছে যে জুলাই আন্দোলনের সময় রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল।

শফিকুল আলম লেখেন, ‘যখন একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান যেমন বিবিসি বাংলাদেশের অপরাধ উন্মোচনে তাদের পুরো অনুসন্ধানী সক্ষমতা কাজে লাগায়,তখন বিশ্বকে অবশ্যই তা গুরুত্ব সহকারে আমলে নিতে হয়। ’

বিবিসির প্রকাশিত অনুসন্ধান প্রতিবেদনে যে অডিও প্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, তা ২০২৪ সালের ছাত্র বিক্ষোভ দমন অভিযানে শেখ হাসিনার ভূমিকার ‘চূড়ান্ত সত্য’ প্রকাশ করেছে বলে উল্লেখ করেন শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, ‘সাধারণ মানুষ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে—এটি এক বিষয়; কিন্তু বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত, সম্পদসমৃদ্ধ ও ফরেনসিক দক্ষতায় পারদর্শী বিবিসির মতো একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যখন স্বাধীনভাবে তদন্ত করে এসব অভিযোগ অকাট্যভাবে তুলে ধরে, তখন তা ভিন্ন মাত্রা পায়। ’

প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং, যা বিশ্বমানের অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা যাচাই করেছেন, প্রমাণ করে যে এ সহিংসতা তাৎক্ষণিক বা দুর্ঘটনাবশত ছিল না। এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত, অনুমোদিত হত্যাকাণ্ড। ’

শফিকুল আলম বলেন, ‘এখন আর প্রমাণ শুধু গল্পনির্ভর বা পক্ষপাতদুষ্ট নয়। এটি ফরেনসিক, যাচাইযোগ্য এবং উপেক্ষা করার মতো নয়। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন ভারতের প্রতি আহ্বান জানাই যেন তারা বিবেক ও নৈতিকতার স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করে। অনেক দিন ধরে ভারত বাংলাদেশের বৈধ অনুরোধ সত্ত্বেও শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে। এখন আর সেই অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়। ’

প্রেস সচিব বলেন, এখন আর ভারত এমন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে এমন একজন ব্যক্তিকে রক্ষা করতে পারে না।

শফিকুল আলম বলেন, এ অবস্থান আর গ্রহণযোগ্য নয়। আঞ্চলিক বন্ধুত্ব, কৌশলগত হিসাব কিংবা কোনো রাজনৈতিক উত্তরাধিকার—কোনো কিছুই বেসামরিক নাগরিকদের পরিকল্পিত হত্যার অজুহাত হতে পারে না।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু যুক্তরাজ্যের নিজস্ব গণমাধ্যম এই নৃশংসতাগুলো উন্মোচন করেছে। ’

‘আমরা ভারতের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন এই মুহূর্তের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এবং ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক সততার যৌথ মূল্যবোধকে সম্মান জানায়। ’

বাংলাদেশের জনগণ ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রাখে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘ভিকটিমরা সান্ত্বনা পাওয়ার অধিকার রাখে। আর বিশ্ব দেখার অধিকার রাখে যে কোনো নেতা, যতই শক্তিশালী হোক না কেন, আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ’

এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।