ঢাকা, শনিবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩২, ২১ জুন ২০২৫, ২৪ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

সড়কের একপাশ অবরোধ শিক্ষার্থীদের, অন্যপাশ চালু রাখল ট্রাফিক পুলিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০৯, জুন ২১, ২০২৫
সড়কের একপাশ অবরোধ শিক্ষার্থীদের, অন্যপাশ চালু রাখল ট্রাফিক পুলিশ

রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীদের অবরোধে বন্ধ থাকা সড়কের বিপরীত পাশে যান চলাচল সচল রেখেছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

প্রগতির সরণির নতুন বাজার অংশে বাড্ডা-বাঁশতলা থেকে কুড়িল যাওয়ার পাশ দিয়ে দুই দিকের যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।

এই অর্ধেক রাস্তাকে দুই ভাগ করে দুই দিকের যান চলাচল কিছুটা সচল করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে কুড়িল থেকে বাড্ডার যাওয়ার অংশটুকু এখনো পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।  

শনিবার (২১ জুন) ডিএমপির অ্যাডিশনাল কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সোরোয়ার বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।

মো. সোরোয়ার বলেন, ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে সকাল থেকেই নতুন বাজার এলাকার এক পাশে সড়ক অবরোধ করেন, যাতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। যদিও আজকে ছুটির দিন ছিল। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নতুন বাজারে দুই পাশের রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বোঝানো হলে তারা একপাশের রাস্তার অবরোধ ছেড়ে দেন।

তিনি বলেন, আন্দোলনস্থলের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করার কারণে গাড়ির চাপ কিছুটা কমেছে। বিমানবন্দরমুখী রাস্তাও মোটামুটি ক্লিয়ার আছে।  

ঢাকার যে কোনো ব্যস্ততম সড়ক কেউ যদি অবরোধ করে রাখে আস্তে আস্তে পুরা ঢাকায় সেটা প্রভাব পড়ে।

এদিকে আন্দোলনরত ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের দাবি আজকের মধ্যে না মানা হলে আগামী রোববার (২২ জুন) ‘ঢাকা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

যেসব দাবিতে আন্দোলন
নতুন বাজার সড়কে অবস্থানরত অবস্থায় ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমের কাছে পাঁচ দফা দাবি উল্লেখ করেন। এগুলো হলো-

১। ইউআইইউ কর্তৃক অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত বহিষ্কার প্রত্যাহার ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব শিক্ষার্থীরা শোকজ পেয়েছে ও বহিষ্কৃত হয়েছে তারা বিগত দুই মাস যাবত ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এছাড়াও নানা মানসিক, সামাজিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেবলমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অন্যায় সিদ্ধান্তের জন্য। সেজন্য, বহিষ্কৃতদের বহিষ্কারাদেশ বিনা শর্তে তুলে নিতে হবে এবং যেসব একাডেমিক ও অন্যান্য ক্ষতি হয়েছে সেসবের ক্ষতিপূরণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে।

২। বহিষ্কারের সঙ্গে জড়িত সব ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা। যেসব কর্তৃপক্ষ সদস্য, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, শিক্ষক, স্টাফ ও শিক্ষার্থীদের প্রমাণ ছাড়া মিথ্যা অভিযোগের কারণে ও কূট-কৌশলে শিক্ষার্থীরা অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের অন্যায়ের সুষ্ঠু তদন্ত ও শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।  

৩। ইউআইউ-তে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম-অসুবিধা ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে রিকর্ম দাবিসমূহ বাস্তবায়ন। ইউআইইউ রিফর্মের যেসকল দাবি পূরণ করা হয় নি সেসকল দাবি পূরণ করতে হবে। পাশাপাশি যেসকল কর্তৃপক্ষ সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা ও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে সেসকল সদস্যদের বহিষ্কার নিশ্চিত করতে হবে। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক ব্যবসাকরণ ও মান অবনতির জন্য দায়ী।  

৪। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি স্বাধীন সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ইউআইইউ এর সাম্প্রতিক অস্থিরতা সহ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো সমস্যা সমাধানে উদাসীন। শত দৌড়াদৌড়ি করেও ইউআইইউ এর ক্রিটিক্যাল সমস্যার সমাধান তারা করতে পারে নি এবং তারা নিজেরাই তাদের অপারগতা স্বীকার করেছে। তারা মূলত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমস্যাগুলোকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এজন্য কেবল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিষয় তদারকির জন্য একটি আলাদা ও স্বতন্ত্র মঞ্জুরি কমিশন গঠন করতে হবে।

 ৫। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ কর বাতিল করতে হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারের আরোপিত ১৫ শতাংশ  কর মওকুফ করতে হবে এবং সরকারি তদারকিতে এই বাঁচানো অর্থ শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও শিক্ষার মানোন্নয়নের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে।

এজেডএস/এমইউএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।