ঢাকা: বিশ্ব শরণার্থী দিবস ২০২৫ এর প্রাক্কালে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস কক্সবাজারে মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং সবুজ প্রত্যাবর্তনে সহায়তার জন্য অতিরিক্ত ২.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ( ২৫.৭ কোটি টাকা) সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। এ অনুদান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য পরিচ্ছন্ন রান্নার জ্বালানি সরবরাহ, পরিবেশ পুনর্বাসন, শরণার্থী ও বাংলাদেশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য সবুজ দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ঢাকার সুইডিশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) যৌথভাবে জাতিসংঘের একটি যৌথ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এসব কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
নিকোলাস উইকস বলেন, তহবিল ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ায়, আমাদের সবচেয়ে গুরুতর প্রয়োজনীয়তা অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং গত কয়েক বছরের অর্জনগুলো বজায় রেখে জীবন বাঁচানোর দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।
তিনি বলেন, এ অনুদানের ফলে শরণার্থীরা পরিচ্ছন্ন জ্বালানি দিয়ে রান্না চালিয়ে যেতে পারবেন। একই সঙ্গে বন এবং তাদের স্বাস্থ্য সংরক্ষণ করতে পারবেন। যতক্ষণ না তারা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে এবং টেকসই উপায়ে মিয়ানমারে ফিরে যেতে না পারেন, ততক্ষণ পর্যন্ত সুইডেন রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের বাংলাদেশি আশ্রয়দাতাদের পাশে সংহতি প্রকাশ করবে, মানবিক মর্যাদা ও পরিবেশগত নেতৃত্ব সমুন্নত রাখবে।
তিনি বলেন, প্রায় আট বছর নির্বাসন, আর্থিক সম্পদ দ্রুত হ্রাস এবং রাখাইন রাজ্যে তাৎক্ষণিক সমাধান ও শান্তি অনুপস্থিতির কারণে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মধ্যে আশা ক্ষীণ হয়ে আসায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ বিশ্ব শরণার্থী দিবসে আমি শরণার্থীদের জানাতে চাই যে আমরা আপনাদের দেখছি। আপনাদেরকে ভুলে যাওয়া হয়নি। আপনারা একা নন।
২০১৯ সাল থেকে সুইডেন সেফ প্লাস প্রোগ্রামকে সমর্থন দিয়ে আসছে। তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী রান্নার সরঞ্জাম বিতরণ, জ্বালানি কাঠ ব্যবহার এবং বন উজাড় বন্ধে সক্ষমতা করেছে। ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত কক্সবাজারে ২ হাজার ৩০০ হেক্টরের বেশি বনভূমির প্রাণ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এলপিজি বিতরণ ১৪,৫০০ হেক্টরেরও বেশি বনকে সুরক্ষিত করেছে এবং জ্বালানি কাঠের ব্যবহারের তুলনায় ৩৭০,০০০ টনেরও বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন রোধ করেছে।
এ সহায়তার সঙ্গে সেফ প্লাসের উদ্যোগে সুইডিশ সহায়তার পরিমাণ ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫৬.৩ কোটি টাকা। ২০১৭ সাল থেকে সুইডেন সর্বমোট ১৩ কোটি ৬৭ লাখ ডলার বা ১ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা দিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয়দের সহায়তা দিয়ে আসছে।
টিআর/জেএইচ