ঢাকা, শনিবার, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ৩১ মে ২০২৫, ০৩ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

গভীর নিম্নচাপে রাজধানীতে অবিরাম বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা-ভোগান্তি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২৩, মে ২৯, ২০২৫
গভীর নিম্নচাপে রাজধানীতে অবিরাম বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা-ভোগান্তি বৃষ্টিতে ভিজেই গাড়িতে উঠতে হয় অফিসগামী যাত্রীদের। ছবি: জিএম মুজিবুর

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে দেশের উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে রাজধানীসহ সারা দেশে অঝোর ধারায় ঝরছে বৃষ্টি।

এর সঙ্গে বইছে দমকা হওয়া। টানা বর্ষণের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ফলে লেগেছে যানজট, চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় বৃহস্পতিবার এমনিতেই রাজধানীতে কর্মব্যস্ততা থাকে। কিন্তু এদিন ভোর থেকেই বৃষ্টির কারণে স্কুল-কলেজ ও অফিস-আদালতগামীসহ কর্মজীবীরা বিপাকে পড়েন। সড়কের কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়, এতে যানজট তৈরি হওয়ায় মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী-পথচারীরা।

এই পরিস্থিতিতে অনেককে ছাতা মাথায় গন্তব্যে হাঁটতে দেখা গেছে। অনেকে রিকশা-সিএনজি অটোরিকশায় চড়েই ছুটেছেন কর্মস্থলে। যারা ছাতা নিয়ে বের হতে পারেননি, তাদের যাত্রী ছাউনি বা কোনো ভবনের নিচে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। তবে দমকা হওয়ার কারণে কম-বেশি সবাইকেই ভিজতে হয়েছে।  

মিরপুর থেকে গুলিস্তানগামী একটি বাসের চালক মোহাম্মদ হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকেই বৃষ্টির কারণে আমাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যাত্রী তো উঠতেই পারছে না। তারপর আবার রাস্তায় জ্যামের কারণেও আজ মালিকের জমা ওঠাতে পারবো কি না সন্দেহ আছে।  

একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন মোহাম্মদ মাসুদ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাসা মিরপুর সেনপাড়ায়, অফিস গুলিস্তানে। সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। আর গাড়িতে উঠতে গিয়েও বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে, অফিসে তো যেতেই হবে। এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে যাতায়াত খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।  

এদিকে অন্যদিনের তুলনায় এদিন রিকশা, সিএনজি অটোরিকশাসহ তিন চাকার বাহনও কম দেখা গেছে রাস্তায়। ফলে কাছের গন্তব্যে যেতে যারা এ ধরনের বাহন ব্যবহার করেন, তাদেরও কিছুটা বিপাকে পড়তে হয়। আবার যেসব রিকশা-অটোরিকশা রাস্তায় আছে, তারা ভাড়া বেশি হাঁকছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃষ্টিতে ভিজেই রিকশা চালাচ্ছেন মোহাম্মদ সাগর (৫০)। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পেট তো আর ঘরে থাকতে দেবে না, কারণ ক্ষুধা ঝড়-বৃষ্টি মানে না, গাড়ি না চালালে সংসার চালাব কী করে? বউ-বাচ্চা না খেয়ে মরবে, তাই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভিজেছি, আর বেশিক্ষণ মনে হয় থাকতে পারবো না। কারণ শরীর থরথর করে কাঁপছে।

এদিকে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার প্রভাব পড়েছে টং দোকান, হকারসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর। তাদের অনেককেই এদিন দোকানপাট গুটিয়ে রাখতে হয়। যা-ও কিছু দোকান খোলা দেখা যায়, সেখানেও ছিল না ক্রেতা। দোকানিরা বলছেন, এভাবে বৃষ্টি চললে তাদের মালামাল রক্ষা করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের খেপুপাড়া ও সাগরদ্বীপের মাঝ দিয়ে সন্ধ্যা নাগাদ নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম করবে। এতে আগামী দুই দিন অতিভারী বৃষ্টি হবে। ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড় ধসের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

জিএমএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।