ঢাকা, সোমবার, ২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আনন্দ উৎসবে অনুষ্ঠিত হলো শত বছরের ঐতিহ্যের গ্রামীণ নচির মেলা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৫
আনন্দ উৎসবে অনুষ্ঠিত হলো শত বছরের ঐতিহ্যের গ্রামীণ নচির মেলা 

রাজবাড়ী জেলা সদরের রবাট ইউনিয়নের মতিয়াগাছিতে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ নচির মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

ঈদ পরবর্তী এ মেলায় সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়।

দিনব্যাপী এ মেলায় ছেলে-বুড়ো সবাই আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে।  

শনিবার (৫ এপ্রিল) সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়ন এবং গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মতিয়াগাছীর মাঠে এ মেলার আয়োজন করা হয়।

স্হানীয়রা জানান, জমিদার মঙ্গল বাগচি, তার ছোট ভাই হরিপদ বাগচি ও বুদু বাগচি তাদের জমিদারি আমলে শতবর্ষ আগে বাগচিবাড়ির মাঠে এ মেলার গোড়াপত্তন করেন। সেই জমিদাররা না থাকলেও আজো তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এলাকার মানুষ। প্রতিবছর চৈত্র মাসে এক দিনের জন্য এই মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।

৭০ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা মো. সিদ্দিক আলী খান বলেন, ছোটবেলা থেকে এই মেলা দেখে আসছি। তখন বড় বড় সার্কাস দল মেলায় আসতো। এখন অবশ্য তা দেখা যায় না। তবে নাগরদোলা, চরকি, হরেক রকমের শত শত দোকানের পসরা আগের মতোই এ মেলায় বসে। নিজ এলাকা ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে বহু মানুষ এ মেলায় আসে। এলাকার মেয়েরা সব মেলা উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলে আসে। হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু ও বয়স্কদের পদচারনায় দিনভর মুখর থাকে মেলার মাঠ। দর্শনার্থীরা মেলায় এসে কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়া এবং মেলার বিভিন্ন আয়োজন উপভোগ করে।

মেলার মাঠে আসা স্থানীয় সালাম সরদার বলেন, হিন্দু জমিদাররা এই মেলা চালু করেন। বহু বছর ধরে এ মেলা এ অঞ্চলের একটা সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়ে আছে।

মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী কাজী সোহাগ বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও মেলায় ঘুরতে এসেছি। অনেক আয়োজন এখানে। ঘুরে দেখে পরিবারের জন্য কিছু কেনাকাটা করেছি। খুব ভালো লাগছে।

আরেক দর্শনার্থী টিটু শেখ বলেন, বাচ্চাদের জন্য খেলনা কিনেছি। এ মেলায় আশপাশের জেলা থেকেও মানুষ আসে।

গোয়ালন্দ পৌর এলাকা থেকে মেলায় ঘুরতে এসেছে গৃহবধূ সামিয়া ফারহানা। তিনি বলেন, প্রতিবছরই এই মেলায় আসি। ঘোরাঘুরি করি, কেনাকাটা করি, খাইদাই আনন্দ করি। খুব ভালো লাগে।

মিষ্টি মণ্ডার দোকানে আলম শেখ বলেন, মেলায় আজ আমি বিভিন্ন ধরনের মিস্টি, জিলাপি, নিমকি, খুরমা, কটকটি, বাতাসা বিক্রি করছি। অনেক ক্রেতা আনন্দ করে খুশি মনে কিনছে।

রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) শরীফ আল রাজিব জানান, মেলার আগত দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ীদের জান মালের নিরাপত্তায় সব্বোর্চ্চ সর্তক অবস্থানে ছিল পুলিশ। পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন ছিল। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিল পুরো মেলার মাঠ ও আশপাশের এলাকা। কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই ঐতিহ্যবাহী মেলাটি শেষ 

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।