ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ভোটার তালিকায় ভোটারদের ছবি ও বয়স সংযোজন করে তালিকা সংস্কার করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও দুদক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র্যাক)-এর সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী দেবাশীষ দেব সোমবার (২০ অক্টোবর) ই-মেইল এবং রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক (ডিসি), জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার), বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক বরাবর নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, আগামী ৫ নভেম্বর অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ নির্বাচনের অন্যান্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে এখানে স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়নি।
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ভোটার তালিকায় প্রতিটি ভোটারের নামের পাশে বয়স এবং রঙিন ছবি সংযুক্ত করা প্রয়োজন। আগামী তিন দিনের মধ্যে ভোটার তালিকায় ভোটারের বয়স ও ছবি সংযুক্তের মাধ্যমে সংস্কার করে পরবর্তী নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে।
উকিল নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে তাবারুল হক বলেন, ‘অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা স্থানীয় বাজারের পাশে অবস্থিত। এ প্রতিষ্ঠানের শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। বিদ্যালয়ের সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে একাধিক মার্কেট নিয়ে শতাধিক দোকানপাট, দুটি খেলার মাঠসহ নানা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ। এসব সম্পত্তির প্রতি স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির লোভ-লালসা রয়েছে। অতীতে তারা নিজেরা, কিংবা তাদের অনুসারীদের দিয়ে অস্বচ্ছ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কমিটিতে ঢুকে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। এই অস্বচ্ছতার কারণে একজনের ভোট অন্যজন দিয়ে দেয়—অর্থাৎ জাল ভোট হয়। পাশাপাশি এ ভোটে অবৈধ টাকার প্রভাবও দেখা যায়। ’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক ভোটার যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন এবং জাল ভোট রোধ করা যায়, সেজন্য ভোটার তালিকায় নামের পাশে ভোটারের বয়স, রঙিন ছবি ও ঠিকানা সংযোজন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। ’
বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাবারুল বলেন, ‘আগামী তিন দিনের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে হাইকোর্টে রিট করে ভোটার তালিকায় ছবি, বয়স ও ঠিকানা সংযুক্ত করার নির্দেশনা চাওয়া হবে। পাশাপাশি নির্বাচন স্থগিতের আবেদনও জানানো হবে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবক ভোটার তালিকায় ভোটারের ছবি, বয়স ও ঠিকানা না থাকলে, সেসব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কেও একই নির্দেশনা চাওয়া হবে আদালতের কাছে। ’
ইএস/আরবি