জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক সরাসরি উপস্থাপন সম্প্রচারের সময় চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের ফেসবুক পেজে সাইবার হামলা হয়েছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এর আগে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
পরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক সরাসরি সম্প্রচারের সময় চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের ফেসবুক পেজে সাইবার অ্যাটাক (হামলা) হয়। ফেসবুক পেজটি সাময়িকভাবে ডিজেবল (নিষ্ক্রিয়) করে দিয়েছিল হামলাকারীরা। পরে সেটা উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
গত বৃহস্পতিবার এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেষ সাক্ষী মো. আলমগীরকে আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী জেরা শেষ করেন। ২৮ কার্যদিবসে এ মামলায় ৫৪ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আমরা ৫৪ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছি। সাক্ষীদের জবানবন্দির মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি মনে করি সাক্ষীদের জবানবন্দিতে এখন পর্যন্ত যা এসেছে, তাতে আমার আসামিদের নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবো।
এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি বাকি দুই আসামি হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে এই মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। জেরার সময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামীম প্রমুখ।
এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্ত করেন উপ-পরিচালক মো. আলমগীর। সার্বিক সহযোগিতা করেছিলেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা। এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ দেওয়া হয়। ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।
গত ১০ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
ইএস/এএটি