ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯ মহররম ১৪৪৭

আইন ও আদালত

ন্যায়বিচার পাওয়া সহজ করাই সংস্কারের লক্ষ্য: প্রধান বিচারপতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:২৭, জুলাই ১৫, ২০২৫
ন্যায়বিচার পাওয়া সহজ করাই সংস্কারের লক্ষ্য: প্রধান বিচারপতি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ, ছবি: সংগৃহীত

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন ছাড়া কোনো বিচারব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। এ কাঠামোগত স্বাধীনতা বিচার বিভাগের অভ্যন্তরীণ সংস্কার এবং বৃহত্তর শাসনব্যবস্থার সংস্কার রক্ষায় অপরিহার্য।

তিনি বলেন, ‘কার্যকর নাগরিকবান্ধব সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক আইনগত সংস্কারগুলো কেবল আধুনিকায়নের জন্য নয়, বরং ন্যায়বিচারকে সহজপ্রাপ্য করে তোলাই এ সংস্কারের মূল লক্ষ্য। ’

সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে ‘যথাসময়ে বিচার নিশ্চিত করতে পারিবারিক আদালতের পদ্ধতিগত জটিলতা নিরসন’ শীর্ষক একটি জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা (সেলপ) কর্মসূচির উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্র্যাক।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ এবং ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা (সেলপ) ও জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি (জিজেডি) কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক শাশ্বতী বিপ্লব।

কর্মশালায় প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারপ্রক্রিয়ায় পদ্ধতিগত অদক্ষতা দূর করতে দেওয়ানি কার্যবিধির সাম্প্রতিক সংশোধনের মাধ্যমে মামলা পরিচালনা কার্যক্রমের স্তর কমানো হয়েছে, যা অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব ও জটিলতা কমাবে। বিচার বিভাগের সঙ্গে ব্র্যাকের অংশীদারত্বেরও প্রশংসা করেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি বলেন, ব্র্যাকের উদ্যোগে আয়োজিত বিচারক, আইনজীবী, কোর্ট কর্মচারী এবং বিচারপ্রার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত পাঁচটি আঞ্চলিক কর্মশালায় মাঠপর্যায়ের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। যেখানে বিচার কার্যক্রমে সমন জারির পুরো পদ্ধতি, মামলা মুলতবির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, অসংগঠিত মামলা ব্যবস্থাপনা, অপ্রতুল মানসিক সহায়তা এবং আদালতের অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতার কথা উঠে এসেছে।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, পারিবারিক আদালতে ন্যায়বিচার মানে জয় বা পরাজয় নয়; এটি মূলত একটি নিরাময় প্রক্রিয়া। আর এ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে আমাদের এটিকে আরও সহজপ্রাপ্য, সহানুভূতিশীল ও দ্রুততর করতে হবে।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, একটি সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজে প্রতিটি নারী ও কিশোরী ক্ষতিকর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ না থেকে তার পূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশের সুযোগ পায়। সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে ব্র্যাকের বহুমাত্রিক কার্যক্রম রয়েছে। এর মধ্যে জনগণকে সম্পৃক্ত করা, তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নীতিগত ও আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করা উল্লেখযোগ্য। ’

স্বাগত বক্তব্যে শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে শুধু আদালতের পদ্ধতিগত জটিলতা দূর করতে কাজ করছি না, বরং বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছি। বিচারপ্রার্থী ভুক্তভোগীদের মর্যাদা রক্ষা করে একটি ন্যায়সঙ্গত, সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ার কাজ করছি। ’

এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন ও আদালত এর সর্বশেষ