ঢাকা: নির্বাচন বিতর্কিত হলেও শপথ ভঙ্গ হয়নি বলে দাবি করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে. এম. নুরুল হুদা। সোমবার (২৩ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে তিনি এ দাবি করেন।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করে শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জোহা সরকার ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী ইসলাম সজীব রিমান্ড বাতিলসহ জামিন আবেদন করেন।
এরপর বিচারক নুরুল হুদার কাছে কিছু বিষয় জানতে চান। প্রথমে তিনি প্রশ্ন করেন, বিতর্কিত নির্বাচনের কারণে আপনার শপথ ভঙ্গ হয়েছে কিনা? জবাবে তিনি বলেন, আমি শপথ ভঙ্গ করি নাই।
আপনি কি মনে করেন সবাই ভোট দিতে পেরেছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছে কিনা, বলতে পারব না। কমিশনে আমরা পাঁচটা লোক। আমাদের সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, ডিসি, এসপি, প্রিজাইডিং অফিসারসহ প্রায় ১৫/১৬ লাখ লোক নিয়োজিত ছিলেন। ঢাকায় বসে কমিশনের পক্ষে তো দেখার সুযোগ নাই, কোন প্রত্যন্ত এলাকায় কি ঘটনা ঘটছে।
যারা অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা কমিশন নিয়েছে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরপিও অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের ভোটের পর আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। এটা হাইকোর্টের জুরিসডিকশনে (আওতাধীন)। হাইকোর্ট অনিয়ম পেলে পানিশমেন্ট দেওয়ার ক্ষমতা তাদের। নির্বাচন কর্মকর্তা এমনকি নির্বাচন কমিশনের আইনগত কোনো ক্ষমতা থাকে না।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের এক বক্তব্যের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, ডিসি-এসপিকে টাকা দেওয়ার সুযোগই নাই। আর নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের জন্য কমিশনকে দায়ী করা যায় না।
এরপর বিচারক তাকে ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে. এম. নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিন স্থানীয় জনগণ তাকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, লুঙ্গি পরিহিত নুরুল হুদাকে আটক করে জুতার মালা পরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
এর আগে রোববার সকালে শেরে বাংলা নগর থানায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিএনপি।
দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়।
কেআই/এমজে