ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ ভাদ্র ১৪৩২, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২৪ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

রোমে বিদ্রোহীদের জন্য অর্থসহায়তা

গাদ্দাফিকে সরে যেতে হবে: হিলারি ক্লিনটন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৪৬, মে ৬, ২০১১
গাদ্দাফিকে সরে যেতে হবে: হিলারি ক্লিনটন

রোম: লিবিয়ার বেসামরিক লোকজনকে রক্ষা করার সবচেয়ে ভাল পন্থা হচ্ছে দেশটির নেতা মুয়াম্মামি গাদ্দাফিকে অপসারণ করা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন রোমে আয়োজিত একটি বৈঠকে বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেন।



রোমে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের অর্থ সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা।

এদিকে, হিলারির এ মন্তব্য অনৈতিক, অযৌক্তিক ও বেআইনী বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে লিবিয়ার সরকারের মুখপাত্র  মুসা ইব্রাহিম। তিনি বলেন, ‘কার স্বর গুরুত্বপূর্ণ, হিলারি ক্লিনটনের নাকি লিবিয়ার দুই হাজার আদিবাসী নেতার। ’ বৃহস্পতিবার আদিবাসী নেতারা পশ্চিমা হামলার বিরুদ্ধে ত্রিপোলিতে জড়ো হয়।

ক্লিনটন বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে লোকজনের ওপর গাদ্দাফির নির্মম, পাশবিক আক্রমণ বন্ধ করা। ’ এজন্য গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পথ তিনি খুঁজছেন বলেও জানান।

রোমে আন্তর্জাতিক নেতাদের সামনে স্পেন ও ডেনমার্ক লিবিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির ঘোষণা দেয়। একইসময়ে নেদারল্যান্ডসও স্বীকৃতি দিলেও পরে দেশটি নাকচ করে। এর আগে ইতালি, ফ্রান্স, কুয়েত ও কাতার বিদ্রোহীদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়।

বিদ্রোহীদের মোর্চা জাতীয় অন্তর্বর্তী পরিষদের (এনটিসি) মুখপাত্র জালাল আল-গালাল জানান, পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদেল হাফিজ ঘোগা এতে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন।

রোমে ২২ দেশ, ন্যাটো, আরব লীগ ও এনটিসির নেতা মুস্তাফা আবদেল জলিলসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংগঠন বৈঠকে অংশ নিয়েছে।

গাদ্দাফিকে উৎখাত করতে আন্তর্জাতিক নেতারা বিদ্রোহীদের অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিদ্রোহীদের এ মুহূর্তে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে। এ অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে সেনাদের বেতন-ভাতা ইত্যাদি কাজে খরচ করবে। স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেঁ জুপে বলেন, এরইমধ্যে ২৫ কোটি ডলার জড়ো হয়েছে। তবে হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে লিবীয় সরকারের তিন হাজার কোটি ডলারের অর্থসম্পদ জব্দ করা হয়েছে। তা লিবিয়ার জনগণের কাজে লাগানোর জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। ’

ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ জোরারোপ করে বলেন, আর্থিক সহায়তা যাতে অস্ত্র কেনার জন্য ব্যবহার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, ‘এ অর্থ বিদ্রোহীদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার কাজে ব্যবহার হবে। লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে। এজন্য অর্থ দরকার। ’

বৃহস্পতিবার সহস্রাধিক লোককে মিসরাতা থেকে বেনগাজিতে সরিয়ে আনা হয়। বুধবার গাদ্দাফির বাহিনীর গুলিতে অন্তত পাঁচজন লোবক নিহত হয়। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে লিবিয়ায় কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) জানিয়েছে।

পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো লিবিয়ায় জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। লিবিয়ার আকাশে নো ফ্লাই জোন আরোপ করা প্রাথমিক লক্ষ্য হলেও মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করা অভিযানের লক্ষ্য বলে জানা গেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নেতাদের কাছ থেকে এমনই তথ্য বেরিয়ে আসছে। এরইমধ্যে গাদ্দাফির আশ্রয় নেওয়া ভবনে বেশ কয়েকবার হামলা চালিয়ে ন্যাটো। একটি হামলায় গাদ্দাফির ছেলেসহ নাতি-নাতনিরা নিহত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।