জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে ইসরায়েল। খবর বিবিসির।
এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক আইনে সংজ্ঞায়িত পাঁচটি গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে চারটি সংঘটিত হওয়ার যৌক্তিক ভিত্তি রয়েছে।
এগুলো হলো—একটি গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা, তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে গুরুতর ক্ষতি করা, পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস নিশ্চিত করার মতো জীবনযাত্রার শর্ত চাপিয়ে দেওয়া এবং জন্মরোধ করা।
এতে ইসরায়েলি নেতাদের বক্তব্য এবং ইসরায়েলি বাহিনীর আচরণকে গণহত্যার অভিপ্রায়ের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা প্রতিবেদনটিকে ‘বিকৃত ও মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রের মন্তব্য জাতিসংঘের কমিশনের তিন বিশেষজ্ঞ ‘হামাসের এজেন্ট’।
তিনি আরও দাবি করেন, হামাসই ইসরায়েলে গণহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে— এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে, পরিবারগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে এবং প্রকাশ্যে প্রতিটি ইহুদিকে হত্যার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে।
হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এরপর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬৪ হাজার ৯০৫ জন নিহত হয়েছেন।
গাজায় বাসিন্দাদের বারবারই বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে। উপত্যকাটিতে ৯০ শতাংশেরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে; স্বাস্থ্যসেবা, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে; এবং জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা গাজা সিটিতে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছেন।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে তদন্তের জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল ২০২১ সালে স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠন করে। এর উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক মানবিক ও মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করা।
তিন সদস্যের এই বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান হলেন নাভি পিলাই, যিনি জাতিসংঘের সাবেক মানবাধিকার প্রধান এবং রুয়ান্ডার গণহত্যার ওপর আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
কমিশনের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও সেনারা ১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদে বর্ণিত পাঁচটি অপরাধের মধ্যে চারটিই সংঘটিত করেছে। আর এসব অপরাধ গাজার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে করা হয়েছে।
আরএইচ