ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় কাতারের প্রতি সংহতি জানাতে একত্রিত হচ্ছে আরব ও ইসলামিক বিশ্ব। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দোহায় বসছে শীর্ষ সম্মেলন, যেখানে অংশ নেবে আরব লীগ এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য রাষ্ট্রগুলো।
গত সপ্তাহে দোহায় ফিলিস্তিনি আন্দোলন হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর এই জরুরি সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। হামাসের দাবি, ওই হামলায় সংগঠনের পাঁচজন সদস্য নিহত হয়েছেন, তবে শীর্ষ নেতৃত্ব অক্ষত রয়েছে। হামলায় কাতারের নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যও নিহত হন।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে প্রস্তাবনার খসড়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত বলেছেন, এই সম্মেলনের মূল বার্তা হলো কাতার একা নয়; আরব ও ইসলামিক দেশগুলো তার পাশে রয়েছে। ’
গত ৯ সেপ্টেম্বরের হামলার পর বিশ্বজুড়ে নিন্দা সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কাতারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন। দোহাকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, কাতারকে অবশ্যই হামাস নেতাদের বহিষ্কার বা বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। না হলে ইসরায়েল নিজেই ব্যবস্থা নেবে।
নেতানিয়াহুর এই অবস্থান কাতার ও ইসরায়েলের সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বাড়িয়েছে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো উপসাগরীয় মিত্র রাষ্ট্রগুলো, যারা ২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিল এখন নতুন করে বিভক্তির মুখে পড়েছে।
প্রায় দুই বছর ধরে চলা গাজা যুদ্ধের অবসানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে আসছে কাতার। দোহা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাচ্ছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও দোহায় ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের হামলা ইসরায়েল কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক নয়। কাতারকে ‘ঘনিষ্ঠ মিত্র’ আখ্যায়িত করে ট্রাম্প জানান, দেশটি শান্তি প্রতিষ্ঠায় কঠোর পরিশ্রম করছে। যদিও তিনি হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যকে ‘সঠিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। হামলার পর কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিকে তিনি আশ্বাস দেন, কাতারের মাটিতে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। ওইদিন ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়, যাদের মধ্যে বর্তমানে ৪৮ জন এখনও বন্দি আছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে এই জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিতের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কাতার। নেতানিয়াহু বলেছেন, কাতারে অবস্থানরত হামাস নেতাদের নির্মূলের মাধ্যমেই গাজা যুদ্ধের অবসান এবং জিম্মি সংকটের সমাধান সম্ভব।
এমজে