যখন আপনি সুনামির ঢেউকে ছুটে আসতে দেখবেন, ততক্ষণে হয়ত অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবু বাঁচার চেষ্টা তো করবেন।
শক্তিশালী সুনামি যখন ধেয়ে আসে, পৃথিবীর উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে যেন নরক নেমে আসে। আগে থেকে সতর্ক হওয়া গেলে প্রাণহানি ঠেকানো যায় হয়ত। কিন্তু অর্থনৈতিক ক্ষতি, সামাজিক ক্ষতি ঠেকানো কঠিন হয়।
সুনামি হলো সমুদ্রের ঢেউয়ের একটি সিরিজ। সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্প থেকে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়, যেমনটি রাশিয়ার ভূমিকম্প থেকে হয়েছে। এছাড়াও উল্কাপাত, আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ বা ভূমিধস হলে হঠাৎ বিশাল জলরাশির যে আন্দোলন হয়, তা থেকেও জন্ম হয় সুনামির। এই শুরুটা হয়ত সাগরের অনেক গভীরে হয়। কিন্তু ঢেউ যখন পানির কম গভীরতার স্থান উপকূলে এসে পড়ে, তখন তা গতি হারিয়ে প্রচণ্ড উঁচু হয়ে ওঠে। তারপর সেই জলরাশি আছড়ে পড়ে ধ্বংস করে দেয় উপকূলের সবকিছু।
জাপানি সুনামি বিশেষজ্ঞ কুবোটা তাতসুয়া বলেছেন, সুনামির ঢেউ নিয়মিত ঢেউয়ের চেয়ে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। কিন্তু শুরুতে ঢেউগুলো দেখে তেমন মনে নাও হতে পারে। প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে দানবাকৃতির ঢেউগুলো ঘণ্টায় প্রায় প্রায় ৮০০ কিলোমিটার গতিতে সাগর পাড়ি দিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ে।
সাগরের যে ঢেউ আমরা সবসময় দেখে থাকি, সুনামি তেমন ঢেউ তোলে না। বরং এটি পানির পুরো স্তম্ভের একটি গতিময় অবস্থা। তাই সুনামির ঢেউয়ে থাকে প্রচণ্ড শক্তি আর ক্ষমতা। তাই দেখতে ছোটখাট ঢেউয়ের মতো উঁচু না হলেও এটি প্রচণ্ড ক্ষতি করতে পারে বলে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন কুবোটা তাতসুয়া।
তাই সুনামি সতর্কতা জারি করা হলে আশঙ্কা অনুযায়ী বিশাল আকারের ঢেউ না উঠলেও চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করতেই হবে। তখন সাগর উপকূল থেকে দূরে থাকতেই হবে বলে জানিয়েছেন কুবোটা তাতসুয়া। সরকারি সংস্থাগুলোর জারি করা নির্দেশনাগুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে বলেছেন তিনি।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুনামির ঢেউয়ের আকার এবং তীব্রতা বাড়তে পারে। ৩০ জুলাইয়ের সুনামিতে জাপানে এমনটিই দেখা গেছে। কুবোটা জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে বেশ কয়েক ঘন্টার মধ্যে একাধিক ঢেউ ধেয়ে আসতে পারে। এমনকি প্রথম ঢেউ খুব একটা বড় না হলেও, পরে আরও বড় সুনামি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এমএম