ইসরায়েল গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে একের পর এক বিমান হামলা চালিয়েছে, যার ফলে শত শত ফিলিস্তিনি পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা এমনটি জানিয়েছেন।
উদ্ধারকর্মীরা পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন এবং আহত বহু মানুষকে গাজা সিটির আল-আহলি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এই হামলার আগে ইসরায়েল বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
বিদ্যমান পরিস্থিতির মধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর যুদ্ধবিরতির চুক্তির জন্য চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
গাজা সিটির বাসিন্দারা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী শহরের ঘনবসতিপূর্ণ পূর্বাঞ্চলে ডজন ডজন বিমান হামলা চালিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কর্মীদের পোস্ট করা ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, বিস্ফোরণের শব্দ, আগুনের শিখা ও ঘন ধোঁয়ায় আকাশ ছেয়ে গেছে। রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে উঠছিল বিস্ফোরণের পরপরই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটির পশ্চিমাঞ্চলের আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে একটি হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। জয়তুন এলাকার একটি স্কুল এক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। স্কুলটিতে গৃহহীন পরিবারগুলো অবস্থান করছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) গাজা উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে অধিকাংশ মানুষ দক্ষিণের দিকে না গিয়ে গাজা সিটির পশ্চিমের দিকে সরে গেছেন।
জয়তুন থেকে পালিয়ে আসা সাত সন্তানের জননী আবির তালবা বলেন, আমরা সবকিছু ফেলে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। ফোনে আরবিতে রেকর্ড করা বার্তা এসেছিল, যেখানে আমাদের অবিলম্বে সরে যেতে বলা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, এই নিয়ে আমরা সপ্তমবার পালালাম। আমরা আবারো রাস্তায়। আমাদের খাওয়ার কিছু নেই, পানি নেই। আমার বাচ্চারা না খেয়ে কষ্ট পাচ্ছে। মনে হচ্ছে, মৃত্যু হয়তো এই কষ্টের চেয়ে সহজ।
মানবিক সংকট আরও প্রকট হচ্ছে। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এ ধরনের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ এবং লাগাতার বিমান হামলা গাজায় ইসরায়েলি স্থল অভিযানের বিস্তারেরই অংশ হতে পারে।
তবে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে কিছু সামরিক বিশ্লেষক মনে করছেন, গাজায় সামরিক অভিযানের লক্ষ্য প্রায় পূরণ হয়ে এসেছে। সাবেক অনেক সেনা কর্মকর্তাও মনে করছেন, গাজায় যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয়ে যদি গেরিলা লড়াইয়ে পরিণত হয়, তাহলে সেখানে বন্দি, বেসামরিক লোকজন এবং সেনাদের আরও বেশি প্রাণহানি ঘটতে পারে।
আরএইচ