ঢাকা, শনিবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২, ২১ জুন ২০২৫, ২৪ জিলহজ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলি বর্বরতায় আরও ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৪০, জুন ২০, ২০২৫
ইসরায়েলি বর্বরতায় আরও ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত

কেন্দ্রীয় গাজা উপত্যকার নেটজারিম করিডোরের কাছে মানবিক ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ ফিলস্তিনিদের ওপর আবারো গুলি চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।

তাছাড়া ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহের পশ্চিমে একটি বাড়িতে বোমা হামলা চালায়, যেখানে অন্তত ৮ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছে।

গাজার হাসপাতালগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার(২০ জুন) ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

২৭ মে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে, সহায়তা কেন্দ্রগুলোর কাছে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি হামলায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছে।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি গোপন দল জিএইচএফ-এর অধীনে সহায়তা বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে, যাদের ‘গাজায় নিরাপদে সহায়তা পৌঁছাতে ব্যর্থ’ হওয়ায় জাতিসংঘ কড়া সমালোচনা করেছে।  

সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলছে, ইসরায়েল যখন মার্চের শুরু থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে, তখন পুরো জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের হুমকিতে পড়ে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের মহাপরিচালক ইসমাইল আল-থাওবাতা বৃহস্পতিবার বলেছেন, এখন পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে মোট ৪০৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ৩,২০৩ জন আহত হয়েছেন।

ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, গাজা মানবসৃষ্ট খরার মুখে, কারণ সেখানে পানির অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার  শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, শিশুরা পিপাসায় মারা যাওয়া শুরু করবে। মোট পানযোগ্য পানি উৎপাদনকারী স্থাপনাগুলোর মাত্র ৪০ শতাংশ এখনো কার্যকর আছে।

জাতিসংঘের এই সংস্থা সতর্ক করেছে, জিএইচএফ-এর বিতরণ ব্যবস্থা গাজার বিপর্যস্ত পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে।

সম্প্রতি গাজায় সফর করে ফেরা এল্ডার জানান, তিনি বহু নারী ও শিশুর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন যারা খাবার নিতে গিয়ে আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন শিশুর কথা উল্লেখ করেন যে একটি ট্যাংকের গোলায় আহত হয়ে পরে মারা যান।

তিনি বলেন, কোন কোন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র কখন খোলা থাকবে তা নিয়ে জনসাধারণের কাছে স্পষ্ট তথ্য না থাকায় অনেক সময় বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

তিনি বলেন, কখনো কখনো বলা হয়, একটি সাইট খোলা আছে, কিন্তু পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা হয় তা বন্ধ। কিন্তু গাজার ইন্টারনেট বন্ধ থাকায়  মানুষ তা জানতে পারেনা।

বুধবার জিএইচএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তিনটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে মোট ৩০ লাখ খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছে, যেখানে কোনো সহিংসতা হয়নি।

ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ চলাকালে, দেশটি ইরানের সঙ্গেও এক সপ্তাহ ধরে হাম্লা-পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান শুক্রবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এবং গাজায় চলমান গণহত্যা দ্রুত এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে যেখান থেকে আর ফিরে আসা সম্ভব নয়।

এই পাগলামি যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ করতে হবে, ইস্তাম্বুলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার যুব ফোরামে এক ভাষণে তিনি বলেন। আজ ইসরায়েল অভিযোগ করেছে যে তাদের হাসপাতালগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অথচ তারা গাজায় এখন পর্যন্ত ৭০০টির বেশি স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে — এই সময় তিনি আবারো যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।

সূত্র: আল জাজিরা

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।