ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটোর বর্ষসেরার খেতাব জিতেছে বর্বর ইসরায়েলের হামলায় দুই হাত হারানো গাজার এক বালকের ছবি। ফিলিস্তিনি আলোকচিত্রী সামার আবু এলুফ ছবিটি তুলেছিলেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, এবার ৫৯ হাজার ৩২০টি ছবি থেকে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটোর ৬৮তম সংস্করণের বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়েছে। ছবিগুলো তুলেছেন ১৪১টি দেশের ৩ হাজার ৭৭৮ আলোকচিত্রী। দুর্দান্ত সব ছবির মধ্যে বর্ষসেরা হয়েছে গাজার সেই বালকের ছবি। এতে দেখা যাচ্ছে, দুই হাত হারানো এক ফিলিস্তিনি বালক বিষণ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ওই বালকের নাম মাহমুদ আজ্জোর। তার বয়স ৯। তিন মাস আগে গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামলার শিকার হয় মাহমুদ। সেদিন এক বিস্ফোরণে তার একটি হাত উড়ে যায়, অন্যটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাহমুদকে চিকিৎসা দিতে কাতারের দোহায় আনা হয়। সেখানে চিকিৎসা করালেও ক্ষতিগ্রস্ত হাতটি কেটেই ফেলতে হয়। সেখানে মাহমুদের ছবিটি তোলেন আলোকচিত্রী আবু এলুফ।
ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো অর্গানাইজেশনের প্রকাশিত বিবৃতিতে আলোকচিত্রী সামার আবু এলুফ বলেছেন, ‘মাহমুদের মা আমাকে সবচেয়ে কঠিন যে বিষয়টি বর্ণনা করেছেন, সেটি হলো— মাহমুদ যখন বুঝতে পারে তার দুই হাত কেটে ফেলা হয়েছে। তখন সে তার মাকে জিজ্ঞেস করেছিল এখন থেকে কীভাবে তাকে জড়িয়ে ধরবে। ’
ছবিটির সঙ্গে সংযুক্ত নোটে এ কথাগুলো লিখেছেন আবু এলুফ, যা নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো এক্সিকিউটিভ পরিচালক জওমানা এল জেইন খৌরি বলেছেন, ‘এটি স্থিরচিত্র হলেও এটা উচ্চস্বরে কথা বলছে। এটি একটি বালকের গল্প বলে, সঙ্গে বলে একটি যুদ্ধের কথা। যেটির প্রভাব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পড়বে। ’
জওমানা এল জেইন খৌরেই নন, সবার বক্তব্য একই। ছবিটি গাজা যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয়ক্ষতির স্পষ্ট স্মারক, যেখানে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল এবং গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করেছে দখলদাররা।
জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় নিহতদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৫
এসএএইচ