ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ ভাদ্র ১৪৩২, ২১ আগস্ট ২০২৫, ২৬ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

‘পৃথিবীর সবচেয়ে দয়ালু বিচারক’ ফ্র্যাংক ক্যাপ্রিও মারা গেছেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৫৭, আগস্ট ২১, ২০২৫
‘পৃথিবীর সবচেয়ে দয়ালু বিচারক’ ফ্র্যাংক ক্যাপ্রিও মারা গেছেন

কোর্ট ভিডিওর জন্য বিশ্বজোড়া খ্যাতি পাওয়া বিচারক ফ্র্যাংক ক্যাপ্রিও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন। মানবিকতার জন্য তিনি ‘পৃথিবীর সবচেয়ে দয়ালু বিচারক’ নামে পরিচিত ছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের রাজধানী প্রভিডেন্সের এই সাবেক বিচারকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে জানানো হয়, তিনি দীর্ঘ ও সাহসী লড়াইয়ের পর শান্তিপূর্ণভাবে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “সহানুভূতি, বিনয় ও মানুষের ভেতরের ভালোত্বে অটল বিশ্বাসের কারণে বিচারক ক্যাপ্রিও লাখো মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছেন। আন্তরিকতা, রসবোধ আর মমত্ববোধের কারণে চেনা সবার হৃদয়ে তিনি অমলিন হয়ে থাকবেন। ”

এতে আরও বলা হয়, তিনি শুধু একজন সম্মানিত বিচারকই নন, ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ স্বামী, পিতা, দাদা, প্রপিতামহ এবং বন্ধু। তার রেখে যাওয়া উত্তরাধিকার হলো অসংখ্য মানবিক কাজ, যেগুলো অন্যকে অনুপ্রাণিত করেছে। তার সম্মানে আসুন আমরাও চেষ্টা করি পৃথিবীতে আরও কিছুটা সহমর্মিতা ছড়িয়ে দিতে—যেমন তিনি প্রতিদিন করেছেন।

অনেকে বিচারক ফ্র্যাংক ক্যাপ্রিওকে চেনেন টেলিভিশন শো Caught in Providence থেকে, যার ক্লিপস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। আদালতে তার দয়া ও সহানুভূতির জন্যই তিনি পরিচিত হন ‘পৃথিবীর সবচেয়ে দয়ালু বিচারক’ হিসেবে।

এই অনুষ্ঠান প্রথম প্রচারিত হয় ২০০০ সালে এবং চারবার ডে-টাইম এমি পুরস্কারের মনোনয়ন পায়।

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ‘জিএমএ৩’–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “সহানুভূতি, বোঝাপড়া আর সমবেদনা আমার শৈশব ও বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা থেকে এসেছে। ”

ক্যাপ্রিও বলেছিলেন, “আমার বাবা–মা ইতালি থেকে এসেছিলেন, তারা সব প্রতিবেশীর খোঁজখবর নিতেন, সাহায্য করতেন—এসব অভিজ্ঞতাই আমার জীবনে প্রভাব ফেলেছে। ”

২০২৪ সালে এনবিসি বস্টনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “কখনো কখনো শুধু কারও কাঁধে হাত রেখে বলে দেওয়া যে, তুমি তার ওপর বিশ্বাস রাখো—এটাই একজন মানুষের জীবন পাল্টে দিতে পারে। ”

১৯৩৬ সালের ২৩ নভেম্বর জন্ম নেওয়া ক্যাপ্রিও বড় হয়েছেন প্রভিডেন্স, রোড আইল্যান্ডে। প্রায় ৫০ বছর পর সেখানেই তিনি পৌর আদালতের বিচারক হন।

আইন পেশায় আসার আগে তিনি প্রভিডেন্সের হোপ হাই স্কুলে আমেরিকান গভর্নমেন্ট পড়াতেন। পাশাপাশি রাতের বেলা বস্টনের সাফোক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ল’-তে পড়াশোনা করতেন।

ফ্র্যাংক ক্যাপ্রিও ১৯৮৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রভিডেন্স মিউনিসিপ্যাল কোর্টের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নিজের ৮৭তম জন্মদিনের কিছু পরেই তিনি সামাজিক মাধ্যমে এক আবেগঘন ভিডিও বার্তায় জানান, তিনি অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন।

সেই ভিডিওতে তিনি বলেন, “আপনাদের প্রত্যেককে অনুরোধ করব আমার জন্য প্রার্থনা করতে। কিছুদিন আগে আমি অসুস্থ বোধ করি, পরীক্ষা করালে যে রিপোর্ট আসে তা ভালো ছিল না। আমার অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার ধরা পড়েছে, যা ভীষণ কঠিন এক ধরনের ক্যানসার। ”

স্ত্রী জয়েস ক্যাপ্রিও, তাদের পাঁচ সন্তান, সাত নাতি–নাতনি এবং দুই প্রপৌত্রকে রেখে গেছেন বিচারক ফ্র্যাংক ক্যাপ্রিও।

সূত্র: এবিসি নিউজ

এমজেএফ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।