ঢাকা, রবিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩২, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনযুদ্ধ বন্ধ করতে না পারলে ‘হাল ছেড়ে’ দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৫
ইউক্রেনযুদ্ধ বন্ধ করতে না পারলে ‘হাল ছেড়ে’ দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের  মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি টানা সম্ভব না হলে যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা ত্যাগ করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

তিনি বলেছেন, ‘যদি ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করা সম্ভব না হয়, তাহলে আমাদের হাল ছেড়ে দিতে হবে।

আমাদের এ বিষয়ে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ’

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) প্যারিস ত্যাগ করার আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।  

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের অবসান বিষয়ে আলোচনা করতে ইউরোপীয় এবং ইউক্রেনীয় মিত্রদের সঙ্গে দেখা করার একদিন পর এই মন্তব্য করলেন মার্কো রুবিও।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ইউরোপীয় নেতাদের কার্যত অন্ধকারে রেখে একক প্রচেষ্টায় কাজটি চালিয়ে নিচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। যে কারণে এবার ইউরোপীয় দেশগুলোকে এই আলোচনায় যুক্ত করতে প্যারিসে বৃহস্পতিবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এদিন ফ্রান্স, জার্মানি, ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠক সফল হয়েছে বলেই দাবি সব পক্ষের।  

এর আবহ দেখা গেছে শুরুতেই। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ নিজে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ট্রাম্পের প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফকে। সম্প্রতি রাশিয়ায় গিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন উইটকফ।

যদিও ফ্রান্সের তরফে এখনো পর্যন্ত বৃহস্পতিবারের বৈঠক নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে সূত্র জানিয়েছে, বৈঠক সফল হয়েছে। আগামী সপ্তাহে লন্ডনে এ নিয়ে আরো একটি বৈঠক হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে এদিন। ওই বৈঠকে ফ্রান্স, ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরা থাকবেন।

প্যারিসের বৈঠক বিষয়ে শুক্রবার রুবিও বলেন, আমি ও উইটকফ এসেছি যুদ্ধের অবসানের জন্য কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে তার আরও সুনির্দিষ্ট রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করতে। যদি কোনোমতেই যুদ্ধ বন্ধ সম্ভব না হয়, যদি আমরা সিদ্ধান্ত কার্যকরের রূপরেখা থেকে এতটাই দূরে থাকি যে সফল হব না; সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলবেন, ‘আমাদের কাজ শেষ’।

তিনি যোগ করেন, কারণ, এটা আমাদের যুদ্ধ নয়। আমরা এটা শুরু করিনি। যুক্তরাষ্ট্র গত তিন বছর ধরে ইউক্রেনকে সাহায্য করে আসছে এবং আমরা চাই এই যুদ্ধ শেষ হোক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই যুদ্ধ বন্ধ করতে ৮৭ দিন ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, এটা সম্ভব কিনা। এই কারণেই আমরা উভয় পক্ষকেই সম্পৃক্ত করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফরাসি কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে অ্যামেরিকান প্রতিনিধিরা এই আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কো রুবিও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গেও কথা বলেছেন এবং যুদ্ধ বন্ধে একই রূপরেখা পৌঁছে দিয়েছেন তাকে। তবে রূপরেখা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি বিবৃতিতে।  

এর আগে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি শান্তিচুক্তির খসড়ায় ইউক্রেন সম্মতি জানালেও সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যুদ্ধ-বিরতির ওই খসড়া তার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, প্যারিসে যারা বৈঠক করছেন তারা ক্রেমলিনের ওপর আরো চাপ তৈরি করুক। জেলেনস্কির ভাষ্য, ‘রাশিয়া প্রতিটি দিন, প্রতিটি রাত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উচিত হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ চাপের মুখে ফেলা। তাহলেই এই যুদ্ধের অবসান সম্ভব। শান্তিচুক্তি তৈরি হওয়া সম্ভব। ’

সূত্র: সিএনএন, ডয়েচে ভেলে

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৫
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।