ঢাকা, সোমবার, ৮ বৈশাখ ১৪৩২, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

৫৪ বছরেও সব মায়ের জন্মদানের দায়িত্ব নিতে না পারা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা: ডা. সায়েদুর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৫
৫৪ বছরেও সব মায়ের জন্মদানের দায়িত্ব নিতে না পারা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা: ডা. সায়েদুর

ঢাকা: ৫৪ বছরেও রাষ্ট্র তার সব মায়ের জন্মদানের দায়িত্ব নিতে পারেনা এটা একটা বড় ধরনের ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যা) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।

রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে মাতৃ এবং শিশু স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এগিয়ে গিয়েছিল, সময়ের আগেই অর্জন করেছিলো, বর্তমানে সে ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছি। সেই বাস্তবতা নিয়ে আমাদের দ্রুত কিছু ইন্টারভেনশন ডিজাইন করা দরকার, যেন ৩০ সালের মধ্যে আমরা এসডিজি অর্জন করতে পারি।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, মাতৃত্ব এটা তার অধিকার। আজকে আমরা বিভিন্ন উপস্থাপনায় দেখলাম, জন্মদানে সরকারের সঙ্গে বেসরকারির খাতের যে বিরাট পার্থক্য, যেটা দুর্ভাগ্যজনক। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার ৫৪ বছর পর, রাষ্ট্র তার সকল মায়ের জন্মদানের দায়িত্ব নিতে পারেনা এটা একটা বড় ধরনের ব্যর্থতা। অবশ্যই বেসরকারি খাতের অবদান স্বীকার করে নিতে হবে। তবে রাষ্ট্রের অন্যতম একটা দায়িত্ব এটা।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় একজন রাষ্ট্রনায়কের বক্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের প্রয়োজন কেন, রাষ্ট্রের প্রয়োজন কি শুধুমাত্র যুদ্ধ করার জন্য। নাকি রাষ্ট্রের প্রয়োজন মাতৃত্বকে নিরাপদ করার জন্য। একটি রাষ্ট্র তখনই সফল যখন সেই রাষ্ট্রের সব মায়ের মাতৃত্ব নিরাপদ করতে পারে। যখন সব শিশুর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত নিরাপদ করতে পারে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে সফল হতে হলে, আজকের প্রতিপাদ্যের সব বিষয়ের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব যার যার জায়গা থেকে পালন করবেন, কিন্তু চৌদ্দ বনাম ৮৪ এটা অবশ্যই একটি অগ্রহণযোগ্য সংখ্যা। এটা শুধু সংখ্যায় নয়, এটা নির্দেশ করে রাষ্ট্র মায়েদের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকার খুব অল্প সময়ের জন্য থাকব। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করতে চাই, দায়িত্ব পালন এবং গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের যে প্রস্তুতি দরকার, সম্পদ বরাদ্দের দরকার, অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে মাতৃত্বকে সামনে নিয়ে আসা দরকার, আগামীতে যারা সরকারে আসবে তাদের সামনে আমরা এটাকে নীতি হিসেবে আনতে চাই। অতএব চৌদ্দ বনাম ৮৪ যেন আগামীতে না থাকে সেই দিকে আমরা নজর রাখবো। তাহলেই আসলে আমাদের একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের যে দৃষ্টিভঙ্গি সেটা প্রতিফলিত হবে।  

এর আগে স্বাস্থ্য দিবসের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, শিশু জন্মের হার সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে ১৪ বনাম ৮৪ শতাংশ।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।  

এবারের বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘হেলদি বেগেনিংস, হোপফুল ফিউচারস’ যার বাংলা ভাবানুবাদ করা হয়েছে 'জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবু জাফর সূর্য।  

সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি (এ.আই.) ডা. আহমেদ জামশেদ মোহাম্মদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৫
আরকেআর/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।