ঢাকা: কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) ২০২২ ব্যাচের কর্মীদের ট্রাস্টে ন্যস্তকরণের জন্য মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রাজধানীর মহাখালীতে বিএমআরসি ভবনের সামনে এ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধন থেকে বলা হয়, কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত বৈষম্যের শিকার সিএইচসিপি-২০২২ ব্যাচের ডাকে আজকে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে আমরা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা প্রতিনিয়ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে বাংলাদেশে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছি। কিন্তু সেবাদাতাদের বেতন আজ সাড়ে ৯ মাস যাবত বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, গত মাসের শেষের দিকে আমাদের মধ্য থেকে ১৩ হাজার ২৮৯ জন সাড়ে ৩ মাসের বেতন-বোনাস পেলেও আমরা ২০২২ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ৬৯৭ জন সিএইচসিপি এবং ১২ জন হেড অফিসের কর্মী বেতন পাইনি। দীর্ঘ সাড়ে ৯ মাস যাবত বেতন না পাওয়ায় আমরা আমাদের পরিবার নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছি। বেতন না পাওয়ায় আমরা ঈদের আনন্দ থেকেও বঞ্চিত হয়েছি।
তারা আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ ২০১১, ২০১৫, ২০১৮ ও ২০২২ সালে চার ধাপে জনবল নিয়োগ করে। বর্তমানে ট্রাস্টের সাংগঠনিক কাঠামোতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে রাজস্বখাতে অস্থায়ীভাবে ১৩ হাজার ৯৪৯টি পদ সৃজিত রয়েছে। সৃজিত সব পদের বিপরীতে অর্থ মন্ত্রণালয় বেতনের জন্য অর্থ বরাদ্ধ দিয়েছে। কিন্তু তারপরও কর্তৃপক্ষ ২০১১, ২০১৫ ও ২০১৮ সালের নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন দিলেও ২০২২ সালে নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন দেয়নি। আমাদের সঙ্গে চরম বৈষম্য করা হয়েছে। ২০১১, ২০১৫ ও ২০১৮ সালের নিয়োগকৃতদের বেতন প্রদানের পরও কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় ৬৫০টি পদের অধিক পদের জন্য বেতন প্রদানের সুযোগ ছিল।
মানববন্ধন থেকে বলা হয়, আমরা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানতে পাচ্ছি, শুধু ২০২২ সালের নিয়োগকৃতদের ট্রাস্টে ন্যস্ত করা হবে না, আমাদের জন্য নতুন করে প্রকল্প পাস করা হবে। ট্রাস্টে প্রায় ৬৫০টি পদ শূন্য এবং ওই পদের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ থাকার পরও আমাদের কেন ট্রাস্টে ন্যাস্ত করা হবে না এ বিষয়ে জানতে আমরা একাধিকবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুফল পাইনি।
একই প্রতিষ্ঠানে দ্বৈতনীতি চাই না। কর্তৃপক্ষ কিছু কর্মীকে স্থায়ীকরণ করে এবং কিছু কর্মীকে প্রকল্পে স্থানান্তারের যে দ্বৈত নীতির প্রণয়ন করে ২০২২ সালের নিয়োগপ্রাপ্তদের সাথে বৈষম্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্ট আইন, ২০১৮ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আন্দোলনকারীরা বলেন, একটি মহল ট্রাস্টের সাংগঠনিক কাঠামোতে প্রয়োজনীয় পদ এবং বরাদ্দ থাকার পরেও আমাদের প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্প পাস করাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। তাই আজ আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।
মানববন্ধন থেকে তিন দফা দাবি দেওয়া হয়। দাবিগুলো হলো-
১। ট্রাস্টের সাংগঠনিক কাঠামোতে সৃজিত সব পদে কর্মী ন্যস্তকরণপূর্বক চাকরি স্থায়ী করতে হবে এবং আজকের মধ্যে আমাদের পদায়নের চিঠি করতে হবে।
২। কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন ২০১৮ এয় ২৪(৩) ধারার বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩। অনতিবিলম্বে আমাদের ৯ মাসের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে হবে।
দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে বলেও মানববন্ধনে জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
আরকেআর/এইচএ/