ঢাকা, সোমবার, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯ সফর ১৪৪৭

ফুটবল

কাবরেরার কোচিং নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কানন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:১৯, আগস্ট ৪, ২০২৫
কাবরেরার কোচিং নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কানন

জাতীয় ফুটবল দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স হতাশাজনক। ভারতের মাটিতে জয় হাতছাড়া এবং ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হারের পর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পথ কঠিন হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের জন্য।

ব্যর্থতার দায় গিয়ে পড়েছে মূলত কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কাঁধে। একাদশ নির্বাচন, খেলোয়াড় বদলে অদূরদর্শিতা এবং ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কার্যকর পরিকল্পনার অভাব—সব মিলিয়ে উঠেছে কোচিং নিয়ে জোরালো প্রশ্ন।

সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, গণমাধ্যমে এবং এমনকি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ভেতরেও। যদিও আপাতত কাবরেরাকে সরানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাফুফে, তবে দলের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য গঠন করা হয়েছে দুটি বিশেষ উপকমিটি। এই উপকমিটিগুলোর দায়িত্ব মাঠের বাইরে থেকে কোচ, খেলোয়াড় ও ম্যানেজমেন্টের প্রতিটি সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখা।

সোমবার বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের অনুশীলন চলাকালে মাঠেই কথা বলেন জাতীয় দলের সাবেক গোলকিপার ও কোচ ছাইদ হাসান কানন, যিনি বাফুফের নির্বাহী সদস্য এবং নবগঠিত উপকমিটির একজন সদস্যও। কাবরেরার কোচিং নিয়ে স্পষ্ট অভিযোগ তোলেন তিনি।

কানন বলেন, “সিঙ্গাপুর ম্যাচে আমরা একটা বড় ভুল দেখলাম—খেলোয়াড় পরিবর্তনে চার মিনিট দেরি করা হয়েছে। ওই সময়টায় দল খেলার চূড়ায় ছিল, ছন্দ ভালো ছিল। হঠাৎ এই দেরিতে টেম্পো নষ্ট হয়ে যায়। আমরা প্রেশারেও ছিলাম তখন। গোল করার সুযোগ ছিল, জেতার সুযোগ ছিল। কিন্তু সিদ্ধান্তে ধীরগতি খরচ করল মূল্যবান সময়। ”

তিনি আরও বলেন, “হোটেল থেকে দলের মাঠে আসার সময় কোচ নিজে দেরি করে এসেছেন। ম্যাচে চারজন খেলোয়াড়কে একসঙ্গে বদলানো হয়েছে—যা আমার কাছে খুবই অপ্রত্যাশিত। একজন কোচ হিসেবে জানি, এটা ঠিক হয়নি। রাকিবকে হঠাৎ রাইটব্যাক হিসেবে খেলানো, মোরসালিনকে মাঠে নামানো, অথচ জামালকে না খেলানো—এসব সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ। ”

কানন মনে করেন, জামাল ভূঁইয়াকে খেলালে বাংলাদেশ গোলের সুযোগ পেত, বিশেষ করে সেট পিস থেকে, “ভুটানের সঙ্গে জামালের সেট পিসে হামজা গোল করেছিল। সিঙ্গাপুর ম্যাচে আমরা ১১টা কর্নার পেয়েছিলাম। জামাল থাকলে অন্তত একটি গোল হতে পারত। ”

কাননের ভাষায়, “আগে নির্বাহী কমিটির সদস্যরা দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকতেন না। তাই অনেক ভুল সময়মতো ধরাও যেত না। এখন থেকে আমরা সিনিয়র থেকে বয়সভিত্তিক সব দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকব। মাঠে ও মাঠের বাইরে কী হচ্ছে, সব পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ”

সিঙ্গাপুর ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের ব্যবস্থাপনাও কড়া সমালোচনার মুখে। কানন বলেন, “৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় খেলোয়াড়রা ক্লান্ত ছিল। অতিরিক্ত সময়ের তিন মিনিট আগে গোল খেয়েছি আমরা। তখন দরকার ছিল ডাগআউট থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা—‘তোমরা দুর্দান্ত খেলেছো, এখন ড্র করে ম্যাচ শেষ করো, পরে নতুন এনার্জিতে মাঠে নামবে। ’ কিন্তু সেই বার্তাটাও যায়নি। ”

কানন অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোচ হাভিয়ের কাবরেরাকে রাখা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত তাদের নয়, “এই সিদ্ধান্ত ন্যাশনাল টিম ম্যানেজমেন্ট কমিটির হাতে, যার চেয়ারম্যান বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। আমরা সদস্য মাত্র, সিদ্ধান্ত নেওয়া আমাদের দায়িত্ব নয়। ”

এআর/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।