ঢাকা, শুক্রবার, ২ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২২ মহররম ১৪৪৭

ফিচার

শেষ হয়ে গেছে মানুষের বিবর্তন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:২৭, আগস্ট ১, ২০১১
শেষ হয়ে গেছে মানুষের বিবর্তন?

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের মস্তিষ্ক সক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে গেছে। মস্তিষ্কের ওজন সম্পূর্ণ দেহের ওজনের মাত্র ২ শতাংশ কিন্তু সে ব্যবহার করে দেহের মোট শক্তির ২০ শতাংশ।

মস্তিষ্কের এই শক্তিসীমার বেশি ব্যবহারের চেষ্টা করলে মানুষ একেবারে ক্লান্ত হয়ে পড়বে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনটিই দাবি করা হয়েছে।

তাহলে কি প্রাণিজগতের মধ্যে মানবজাতি বিবর্তনের চূড়ান্ত ধাপে উপনীত হয়েছে? এই প্রশ্নের সমাধান বুঝি এবার মিলবে।
 
মানুষ আবিষ্কার করেছে পেনিসিলিন, কম্পিউটার, স্পেস শাটল, কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডসহ আরও বিস্ময়কর সব যন্ত্রপাতি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আবিষ্কারেরও কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বলে জানা যাচ্ছে। তাহলে এখন মানুষ তাদের বুদ্ধিমত্তা নতুন আর কোন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করবে?

অনেক বিজ্ঞানীর মতেই, নতুন করে ভাবনার আর কোনো ক্ষেত্র অবশিষ্ট নেই। মানবজাতির মস্তিষ্কের ক্ষমতা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন আরও বেশি বুদ্ধিমান হওয়া বাস্তবিকপক্ষে অসম্ভব বলেই তাদের দাবি।

বিজ্ঞানীদের দাবি, বর্তমানের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান হতে চাইলে মানুষের মস্তিষ্কের আরও অনেক বেশি অতিরিক্ত শক্তি ও অক্সিজেনের প্রয়োজন হবে আর মানুষের শরীর তা সরবরাহ করতে অক্ষম।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মস্তিষ্কের গঠন বিশ্লেষণ এবং এর প্রত্যেকটি কোষ কত শক্তি খরচ করে তার হিসাব করে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুজীববিদ্যার অধ্যাপক সাইমন লাফলিন বলেন, ‘আমরা দেখেছি কাজ করতে হলে  মস্তিষ্ক অবশ্যই শক্তি শোষণ করবে আর শক্তির এই চাহিদা পূরণ করতে গিয়েই আমাদের কর্মদক্ষতা সীমিত হয়ে পড়ে। কাজ করতে গিয়ে শক্তির চাহিদা রয়েছে বলেই তথ্য প্রক্রিয়াকরণেরও একটা সীমা রয়েছে এটা নিশ্চিত। ’

আরেকদল বিজ্ঞানী দাবি করেন, মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের সংযোগ রক্ষাকারী সূক্ষ্ম তারগুলোর বিন্যাস একেক জনের মস্তিষ্কে একেক রকম। চাইলেই এগুলোর সম্মিলিত উন্নয়ন ঘটানো যায় না।

তারা দেখেছেন, অতিশয় চালাক মানুষের মস্তিষ্কে এই তারজাল খুবই উন্নত মানের। এরা মস্তিষ্কের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে বার্তা বয়ে নিতে পারে।

তবে বিজ্ঞানীদের দাবি, এই তারজালকে আরও দক্ষ করতে চাইলে প্রচুর পরিমাণে অতিরিক্ত শক্তি সরবরাহের প্রয়োজন হবে। আগেই বলা হয়েছে এটা করা সম্ভব নয়। সুতরাং আমাদের আরও বেশি চালাক হওয়ার কোনো আশা নেই।

হল্যান্ডের উট্রেচট মেডিক্যাল কেন্দ্রের মনোচিকিৎসার অধ্যাপক মার্টিজন ভন ডেন হিউভেল মানুষের আইকিউয়ের সঙ্গে মস্তিষ্কের তারজালের সম্পর্ক নিয়ে বহুদিন ধরে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, ‘মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ালে এর শক্তি শোষণ অস্বাভাবাকিভাবে বেড়ে যাবে। ’

তিনি বলেন, ‘দূর ভবিষ্যৎ নিয়ে আগে থেকেই বলাটা ঝুঁকিপূর্ণম, তবে এটা পরিষ্কার যে, বুদ্ধিমত্তা বাড়ানোর ব্যাপারে যথেষ্ট বাধাবিপত্তি রয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময় ২১৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।