ভিনসেন্ট ভ্যান গগের নাম শুনলেই চোখে ভাসে তার সেই সূর্যমুখীর ছবি। সাহসী তুলির স্পর্শে জীবন্ত হয়ে ওঠা সূর্যের উষ্ণতার মতো আলোকিত সেই সূর্যমুখী।
ভ্যান গগের ‘স্টারি নাইট’ ছবির পাশাপাশি লন্ডনের ন্যাশনাল গ্যালারির সূর্যমুখী সম্ভবত তার সবচেয়ে পরিচিত শিল্পকর্ম। এটিসহ তিনি সূর্যমুখীর আরও ১০টি ছবি আঁকেন। এই ছবিগুলো তিনটি পর্যায়ে স্বল্প সময়ের মাঝে আঁকা হয়েছিল। প্রথম চারটি ছবি ১৮৮৭ সালে প্যারিসে আঁকা হয়। দ্বিতীয় চারটি ছবি ১৮৮৮ সালে দক্ষিণ ফ্রান্সের আর্লেস শহরে যাওয়ার পর এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে আঁকা হয়।
তৃতীয় পর্যায়টি শুরু হয় ১৮৮৯ সালের গোড়ায়, যখন তিনি আগের বছরের তিনটি চিত্রকর্মের অনুলিপি আঁকেন। তার ১৮৮৮ সালে আঁকা ছবিগুলো ছিল আত্মবিশ্বাস আর উচ্ছ্বাসে ভরা। তিনি নিজেই বলেছিলেন, মার্সেইয়ের লোকেরা যখন বুইয়াবেস সুপ খায়, ঠিক তখন যেমন উচ্ছ্বাস থাকে। ভ্যান গগ যখন কোনো চিঠিতে সূর্যমুখী নিয়ে লেখেন, তখন তিনি কখনো স্পষ্টভাবে বলেননি এই ফুলগুলো তার কাছে আসলে কী অর্থ বহন করে।
সূর্যমুখী ছিল রঙের বিভিন্ন সংমিশ্রণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার এক মাধ্যম, বিশেষ করে হলুদ রঙের বিভিন্ন ছায়ার। তবে এগুলো শুধুই রং পরীক্ষার জন্য ছিল না, বরং একটি বাড়ি সাজানোর জন্যও তৈরি করা হয়েছিল। সেই বাড়িতে থাকার কথা ছিল পোস্ট ইমপ্রেশনিস্ট যুগের আরেক শিল্পী পল গগ্যাঁর। তিনি ভ্যান গগের আগের সূর্যমুখীর ছবি পছন্দ করতেন, তাই হয়তো এই ফুলগুলো ভ্যান গগের একাত্মতা ও বন্ধুত্বের অকৃত্রিম আশা প্রকাশ করেছিল। তবে তাদের সেই বন্ধুত্ব টিকে থাকেনি, যেমনি ভ্যান গগের জীবদ্দশায় শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতির আকাঙ্ক্ষাও পূরণ হয়নি। গগ্যাঁ দুই মাসের মধ্যে তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। ভ্যান গগের মৃত্যু হয়েছিল মাত্র ৩৭ বছর বয়সে। তার অনেক কাজই অবিক্রিত রয়ে গিয়েছিল।
ভ্যান গগের সূর্যমুখীর ছবি ২০ শতকের শুরুর দিকে দ্রুতই খুবই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রথমে ইউরোপের আধুনিক শিল্পীদের মধ্যেই এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ১৯২০ সালে লেখিকা ক্যাথরিন ম্যানসফিল্ড বলেছিলেন, ‘পটের মধ্যে থাকা সেই সূর্যের আলোয় ভরা হলুদ ফুলগুলো আমাকে সৃজনশীলভাবে জাগিয়ে তুলেছিল। ’ ১৯২৩ সালে সমালোচক রজার ফ্রাই এই ছবিগুলোকে ‘সেই বছরের এক বড় সাফল্য’ হিসেবে দেখিয়েছিলেন, যা ভ্যান গগের চরম উদ্দীপনা, প্রাণবন্ততা আর তীব্র আবেগকেই ফুটিয়ে তোলে। পরে এগুলো আরও বেশি জনপ্রিয়তা পায় এবং ভ্যান গগকে শিল্প জগতে সবচেয়ে বিখ্যাত ও প্রভাবশালী চিত্রশিল্পীদের একজন হিসেবে পরিচিতি দেয়।
ভ্যান গগের প্রভাব এখনকার সময়েও যে জ্বলজ্বল করছে, তা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে রয়্যাল একাডেমির প্রদর্শনী ‘কিফার/ভ্যান গগ’-এ। ওই প্রদর্শনীতে দেখা যায় কীভাবে ভ্যান গগের শিল্পকর্ম থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন সমকালীন শিল্পী আনসেলম কিফার। সূর্যমুখী ফুল এখানে এক বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
প্রদর্শনীর মূল আকর্ষণ হলো কিফারের নতুন ভাস্কর্য ‘দানাই’। এতে দেখা যায়, একটি বইয়ের স্তূপ থেকে ফুটে উঠছে সূর্যমুখী। অন্যদিকে একটি কাঠের নকশায় দেখা যায়, শুয়ে থাকা মানুষের শরীর থেকে হেলিয়ানথাস অ্যানুয়াস (সূর্যমুখী ফুল) ফুটে উঠছে। এগুলো কিফারের সূর্যমুখী নিয়ে গভীর আগ্রহের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তার সঙ্গে ভ্যান গগের শিল্পে এই ফুলের রহস্যময় প্রতীকের অর্থ উন্মোচনের সুযোগ করে দেয়।
প্রদর্শনীর কিউরেটর জুলিয়েন ডোমের্ক বলছিলেন, ‘ভ্যান গগের জন্য সূর্যমুখী ছিল তার দক্ষিণের ভাবনার নিদর্শন’। প্যারিস থেকে প্রোভেন্সে চলে যাওয়ার সেই ভাবনাটাই এই ফুলে ফুটে উঠেছে। ভ্যান গগ শুধু একজন চিত্রশিল্পীই ছিলেন না, তরুণ বয়সে আর্ট ডিলার হিসেবে কাজ করেছিলেন। শিল্পের ইতিহাসে যথেষ্ট জ্ঞানও অর্জন করেছিলেন। তাই তার ছবিতে সেই গভীর সাংস্কৃতিক প্রভাব স্পষ্ট দেখা যায়। তিনি ফুলগুলোকে এমনভাবেই ফুটিয়েছেন, কিছু ফুল ঝরে পড়ছে, কিছু এখনো আকাশের দিকে উঁচু হয়ে আছে, আর কিছু ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এটি আসলে সময়ের অবিচ্ছেদ্য গতিকে বোঝানোরই একটি চিত্র।
ডোমের্ক আরও বলেন, ‘কিফারের কাজেও একই বিষয়টি দেখা যায়—জীবনের চক্র, প্রাণের ধারাবাহিকতা, এক তীব্র জীবনদায়ী ফুল, যা দক্ষিণের সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকে। ’
ইতিহাসজুড়ে সূর্যমুখীর প্রতীকী তাৎপর্য
যেকোনো শিল্পের প্রতীকী ব্যাখ্যা মূলত ভাবনার বিবর্তন ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের ওপর নির্ভর করে। সূর্যমুখী ফুলের তাৎপর্যও এমনই এক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে গড়ে উঠেছে। এটি আজ বিজ্ঞানের মতোই মানবিক চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। ভ্যান গগ এই ফুলে মোহাবিষ্ট প্রথম বা একমাত্র শিল্পী ছিলেন না। ইতিহাসজুড়ে অসংখ্য কবি, সাহিত্যিক ও চিত্রশিল্পী সূর্যমুখীকে ঘিরে সৃষ্টি করেছেন অনন্য সব কাজ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, স্যার অ্যান্টনি ভ্যান ডাইক, মারিয়া ভ্যান উস্টারওইক, উইলিয়াম ব্লেক, অস্কার ওয়াইল্ড, ডোরোথিয়া ট্যানিং, পল ন্যাশ ও অ্যালেন গিন্সবার্গ।
অন্যান্য বহু শিল্প প্রতীকের তুলনায় সূর্যমুখী অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্রতীক। এটি আমেরিকার মূলভূমির নিজস্ব উদ্ভিদ, যা কলম্বাস-পরবর্তী ঔপনিবেশিক যুগে ১৬ শতকে ইউরোপে প্রবেশ করে। ইউরোপে চাষের উপযোগী হয়ে ওঠার পর সূর্যমুখীর একটি বৈশিষ্ট্য—সূর্যের দিকে মুখ ঘোরানো (যা হেলিওট্রপিজম নামে পরিচিত)—একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী ব্যাখ্যার জন্ম দেয়।
১৫৬৮ সালে ইতালীয় উদ্ভিদবিদ জিয়াকোমো আন্তোনিও কর্তুসো প্রাচীন পৌরাণিক চরিত্র ‘ক্লাইটি’র সঙ্গে সূর্যমুখীর এই বৈশিষ্ট্য মিলিয়ে দেন। পুরাণ অনুসারে ক্লাইটি সূর্যদেব অ্যাপোলোকে ভালোবেসে তার দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে একসময় মাটির সঙ্গে মিশে হয়ে যান এবং একটি সূর্যমুখী ফুলে পরিণত হন।
এই কাহিনির ফলে সূর্যমুখী হয়ে ওঠে নিবেদিত প্রেমের প্রতীক। মারিয়া ভ্যান উস্টারওইকের ‘অলঙ্কৃত ফুলদানি’ নামক চিত্রকর্মে দেখা যায় একটি কার্নেশন ও সূর্যমুখী। যেন একে অন্যের দিকে অপলক তাকিয়ে রয়েছে—যার নিচে রয়েছে স্নানরত ভেনাস সদৃশ এক ভাস্কর্য, যা ক্লাইটির স্থিরতার দিকেই ইঙ্গিত করে। একইভাবে বারথলোমিউস ভ্যান ডার হেলস্টের ‘সূর্যমুখী হাতে এক তরুণী’ ছবিতে সূর্যমুখী হয়ে উঠেছে তার বৈবাহিক সম্পর্কের প্রতীক। ভালোবাসা ও বন্ধনের গভীর অর্থ বহন করছে এই ফুল।
তবে শিল্পকর্মে সূর্যমুখীর প্রতি এই নিবেদন শুধু প্রেম বা প্রকৃতির সঙ্গে সীমাবদ্ধ ছিল না, ধর্মীয় ভাবনার সঙ্গেও এর গভীর যোগ রয়েছে। অ্যান্টনি ভ্যান ডাইকের এক চিত্রকর্মে দেখা যায়, মিশরে পালানোর পথে বিশ্রামরত কুমারী মেরির মাথার ওপরে সূর্যমুখী আঁকা। এই চিত্রে সূর্যমুখী কুমারী মেরির ঐশ্বরিক ভূমিকার প্রতীক, তিনি যেন আকাশ ও মর্ত্যের মাঝখানে এক সেতুবন্ধন।
ডাচ কবি ও নাট্যকার জুস্ট ফন ডেন ফনডেল ১৬৫৪ সালে সূর্যমুখীর আরেকটি ব্যতিক্রমী তাৎপর্য তুলে ধরেন। তার মতে, সূর্যমুখী হতে পারে শিল্পের প্রতীক, যেমন কচি সূর্যমুখী সূর্যের দিকে মুখ ফিরিয়ে থাকে, তেমনি শিল্পও মনের গভীর তাগিদে ও এক পবিত্র আগুনে উদ্দীপ্ত হয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্যের পেছনে ছুটে চলে।
এই ভাবনারই যেন প্রতিচ্ছবি অ্যান্টনি ভ্যান ডাইকের আরেকটি চিত্রে ফুটে ওঠে। সেই চিত্রে তিনি নিজেকে ও একটি সূর্যমুখীকে দেখিয়েছেন। ছবিটি যেন বলছে, শিল্পী নিজেই সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকা সেই উদ্ভিদের মতো, যিনি নিরন্তর আলো, সৌন্দর্য ও সত্যের সন্ধানে পথ খুঁজে ফেরেন। কিন্তু শিল্প ঐতিহাসিকরা যুক্তি দেন যে এটি আসলে শিল্পীর তার পৃষ্ঠপোষক ইংল্যান্ডের রাজা চার্লস প্রথমের প্রতি নিষ্ঠার প্রতীক। ভ্যান ডাইক এই রাজার ‘প্রধান চিত্রশিল্পী’ হিসেবে কাজ করতেন।
সূর্যমুখীর এই রাজনৈতিক প্রতীকতা আধুনিক শিল্পকর্মেও প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, আই ওয়েইওয়ের ২০১০ সালের ‘সূর্যমুখী বীজ’ শিল্পকর্মে রয়েছে এক কোটি হাত দিয়ে আঁকা মাটির বীজ, যা শিল্পীর কাছে চীনা নেতা মাও সেতুংয়ের পোস্টার থেকে অনুপ্রাণিত। ওই পোস্টারে মাওকে সূর্যের মতো দেখানো হয়, আর তার চারপাশে সূর্যমুখী ফুল যেন তার প্রতি আনুগত্যপ্রকাশকারী জনতার প্রতীক। এটি চীনা জনগণের ওপর মাওয়ের সর্বশক্তিমত্তার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সূর্যমুখীতে মানবজীবনের চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন
সূর্যমুখীর বহুমুখী প্রতীকের ভেতর একটিই অর্থ বারবার ফিরে আসে—নিষ্ঠা, একাগ্রতা, আনুগত্য। ভ্যান গগ সম্ভবত এই ভাবনার কিছুটা জানতেন। যখন তিনি তার বোনকে লিখেছিলেন, সূর্যমুখীর মাঝে আমি যেন আর্ত-কৃতজ্ঞতার ছবি এঁকেছি। তখন হয়তো তিনি সহশিল্পী গগ্যাঁর প্রতি এক সহজ, সরল হৃদয়ের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছিলেন। আবার এ কথার ভেতর লুকিয়ে থাকতে পারে তার আগের ধর্মভক্ত জীবনের ছায়া, হারানো প্রেমের যন্ত্রণা কিংবা চিত্রশিল্পের প্রতি দায়বদ্ধতার আত্মদহন।
ভ্যান গগ কীভাবে জার্মান শিল্পী অনসেলম কিফারকে প্রভাবিত করেছিলেন—এ প্রশ্ন যেমন কৌতূহল জাগায়, তেমনি সূর্যমুখী বিষয়ে তাদের ভাবনার মিল-অমিলও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কিফার নিজেই একবার বলছিলেন, সূর্যমুখীর সম্পর্ক সূর্য ও নক্ষত্রের সঙ্গে, কারণ সে সর্বদা সূর্যের দিকে মুখ ফেরায়। আর রাত নামলে সে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। যখন সে ফোটে, সেই হলুদ বিস্ফোরণই আসলে তার পতনের শুরু। সূর্যমুখী হলো আমাদের অস্তিত্বের রূপক।
কাঠখোদাই চিত্রকর্ম হর্টাস কনক্লুসাসে (২০০৭–২০১৪) কিফার সূর্যমুখীর মধ্য দিয়ে মৃত্যুর ধ্বংসাবশেষ যেমন ফুটিয়ে তুলেছেন, তেমনি আশার বীজও বুনেছেন। তার ছবির সূর্যমুখীগুলো পোড়া, শুকনো, নির্মল। তবুও সেগুলো থেকে বীজ ঝরে পড়ছে মাটিতে। সেই ঝরে পড়া বীজ যেন জানান দিচ্ছে নতুন জীবনের সম্ভাবনার।
কিফার তার অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে ১৭ শতকের এক ব্যক্তিত্বকে উল্লেখ করেছেন। তিনি চিকিৎসক, আধ্যাত্মিক দর্শনের দার্শনিক এবং মহাবিশ্ববিজ্ঞানী রবার্ট ফ্লাড। ফ্লাডের এক বিশ্বাস ছিল, পৃথিবীর জীবন্ত উদ্ভিদসমূহ ও নক্ষত্রগুলোর মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে এবং জীবনের সবচেয়ে সাধারণ বা ন্যূনতম রূপ থেকে শুরু করে একক স্বর্গীয় সত্য পর্যন্ত একটি রহস্যময় যোগসূত্র বিদ্যমান।
কিফারের সূর্যমুখীর ছবিগুলোতে প্রায়শই সূর্যমুখীকে আকাশের পটভূমিতে দেখানো হয়, যা স্মরণ করিয়ে দেয় সূর্যমুখীর সূর্যের দিকে মুখ ফেরানোর বৈশিষ্ট্য (হেলিওট্রপিজম)। যখন সূর্যমুখী মানুষের শরীর থেকে জন্ম নিচ্ছে এমনভাবে দেখানো হয়, তখন তা ফ্লাডের সেই বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে কাজ করে যে, আমাদের আত্মাগুলো স্বর্গের সঙ্গে যুক্ত।
এটা স্পষ্ট যে সূর্যমুখীর প্রতীক এখনো রেনেসাঁ পরবর্তী যুগের বিশ্বাস আর ভাবনার ছাপ বহন করে। ভ্যান গগের সূর্যমুখী ফুলও এই ঐতিহাসিক ধারণাগুলোর কিছু দিক প্রতিফলিত করে এবং তার গভীর ভালোবাসার তীব্র আকাঙ্ক্ষার ইঙ্গিত দেয়—চাই তা প্রকৃতি, শিল্প, ধর্ম অথবা গগ্যাঁর সঙ্গে সৃজনশীল ভ্রাতৃত্বের প্রতীক্ষা হোক।
তবে ভ্যান গগ ও কিফারের হাতে হেলিয়ানথাস অ্যানুয়াস (সূর্যমুখী ফুল) বিশ্বজনীন এক চিন্তার প্রতীক হয়ে ওঠে— যেমন আমাদের জীবনের ক্ষণস্থায়িতা নিয়ে ভাবনা এবং আরও উচ্চতর ও চিরন্তন সত্যের সন্ধান করার আকাঙ্ক্ষা। সূর্যমুখী ফুল সেই বিশ্বাসের প্রতীক, যা আমাদের দৈনন্দিন বাস্তবতার বাইরেও নিয়ে যায়, যেন আমরা আকাশের আলোকস্নাত উষ্ণতা, প্রেম এবং আলো ছুঁয়ে দেখতে পারি। গরমের মৌসুম যখন তীব্র হয়ে ওঠে, প্রকৃত সূর্যমুখী ফুলগুলো আবার ঝলমল করে জীবনের আনন্দে দোলা দেয়। কিন্তু এই আনন্দটা খুব স্বল্প সময়ের জন্যই থাকে।
এমজেএফ