ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ জুলাই ২০২৫, ২৮ মহররম ১৪৪৭

ফিচার

আটলান্টিকে তিমির আর্তনাদ

আশরাফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪:১০, অক্টোবর ৭, ২০১২
আটলান্টিকে তিমির আর্তনাদ

এখন পর্যন্ত মানব সৃষ্ট কারণই সমুদ্রের সর্ববৃহৎ রাজকীয় বাসিন্দা তিমির মৃত্যুর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। গত চার যুগের সমীক্ষায় দেখা গেছে, তিমিদের মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে নেওয়া পদক্ষেপ কার্যকর কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেনি।



বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল ন্যাচারের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

ধারণা করা হয়, উত্তর আটলান্টিকের কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সমুদ্র উপকূলে এখন সব মিলিয়ে মাত্র ৪৬০টির মতো তিমির বিচরণ রয়েছে।   দেশগুলোর সরকার তিমি রক্ষায় নানামুখী পদক্ষেপ হাতে নেয়। এর মধ্যে নির্দিষ্ট অঞ্চলে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা, স্বল্প গতিতে নৌ-যান চালনা ইত্যাদি। ২০০৮ সালে চালু হওয়া এ কার্যক্রম আগামী বছর পর্যন্ত চলবে।

সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী গবেষক জুলি ভান ডার হোপ ও মাইকেল মুর-দু’জনেই আমেরিকা উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এলাকা ম্যাসাচুয়েটসের ওডস হোল এর ওডস হোলের ওসানোগ্রাফি ইনস্টিটিউটে কাজ করছেন।

জুলি, মুর ও তার সহকর্মী গবেষকেরা অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, ১৯৭০-২০০৯ পর্যন্ত উত্তরপশ্চিম আটলান্টিকে আটটি বৃহৎ প্রজাতির ১২২টি তিমির মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে ৪৭৩টি হাম্পব্যাক্স, ২৫৭টি পাখনাওয়ালা তিমিসহ আরো বিভিন্ন প্রজাতির তিমির মৃত্যু হয়েছে।  

অনুসন্ধান ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষকরা এক পর্যায়ে নিশ্চিত হন যে, ৬৭ তিমির শতাংশ মুত্যুই মানবসৃষ্ট কারণে। অপরিকল্পিত ভাবে মৎস্য শিকারই এর প্রধান কারণ বলে অভিহিত করেন তারা।

কনজারভেশন বায়োলজি অনলাইলে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধের তথ্য অনুযায়ী, তিমির মুত্যুর এই মিছিল ঠেকাতে নেওয়া নানামুখী উদ্যোগ কার্যত: কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেনি এদের বাঁচাতে।  

গবেষক মাইকেল মুর তার গবেষণা উপাত্ত তুলে ধরে পরিস্থিতিকে বর্ণনা করেছেন, ‘‘অতিশয় হতাশাব্যঞ্জক’’ হিসেবে।
উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, তিমি মূলত: সিটাসিয়া বর্গভুক্ত জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী। ডলফিন বা শুশুক বলে এদের ভুল করা হলেও এরা আসলে তা নয়। তিমিকে প্রায়শ:ই মাছ বলা হলেও এরা প্রকৃতপক্ষে মানুষের মতই স্তন্যপায়ী।

বিভিন্ন প্রজাতির তিমির মধ্যে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাণী নীল তিমি। খুনে তিমি এবং পাইলট তিমির নোমের সঙ্গে তিমি যুক্ত থাকলেও জীব বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাসের প্রয়োজনে এদের ডলফিন হিসেবে গণ্য করা হয়।
বহু যুগ ধরে মানুষ মাংস, তেল ও অন্যান্য ভেষজ কাঁচামালের প্রয়োজনে নির্বিচারে তিমি শিকার করে চলেছে। বিশেষ করে বিগত শতাব্দীতে ব্যাপক নিধনযজ্ঞে তিমির বহু প্রজাতিই আজ চরম বিপন্ন হয়ে পড়েছে। জীববৈচিত্রের ভারসাম্য রক্ষাও ফেলছে বিরূপ প্রভাব।

বাংলাদেশ সময়:  ০৪০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১২
এআই/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।