জাঁকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো সংস্কৃতি সাংবাদিকদের সংগঠন কালচারাল জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (সিজেএফবি) অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের ২৪তম আসর। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন।
অনুষ্ঠানে সংগীত, টেলিভিশন, ওটিটি, চলচ্চিত্রসহ সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখার শিল্পী-কলাকুশলীদের পুরস্কৃত করা হয়। জুরিবোর্ডের বিচারে ২০২৪ সালের সেরাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্মাননা স্মারক, সনদপত্র ও মেডেল।
অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গানে অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী চাঁদনীর মনোজ্ঞ পরিবেশনা দিয়ে। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম এস রানা, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা তামিম হাসান। সংগঠনের সভাপতি এনাম সরকারের সভাপতিত্বে এই পর্বে আরও বক্তব্য রাখেন গ্লোব সফট ড্রিংকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশীদ, একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান এবং সিইও আব্দুস সালাম, একুশে টেলিভিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসনুভা মাহবুব সালাম, অ্যাডভান্স হোমস প্রাইভেট লিমিটেডের এমডি তওহিদা সুলতানা রুনু প্রমুখ।
আব্দুস সালাম বলেন, ‘একুশে টেলিভিশন বাংলাদেশের সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতায় নিরলসভাবে কাজ করছে। সংস্কৃতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করলে দেশ এগিয়ে যাবে এবং দেশীয় সংস্কৃতি এগিয়ে গেলে দেশ এগিয়ে যাবে। ’
গ্লোব সফট ড্রিংকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই সিজেএফবির এই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে থেকেছি। কারণ, সুস্থ সাংস্কৃতিক বিকাশের মাধ্যমেই একটি সুন্দর জাতি গঠন সম্ভব। ’
এবারের আয়োজনে দু’জন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে বিশেষে সম্মাননা প্রদান করা হয়। সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেনে ব্ল্যাক ডায়মন্ড বেবী নাজনীন এবং চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য সম্মাননা পেয়েছেন পূর্ণিমা। বিশেষ সম্মাননা তুলে দেন গ্লোব সফট ড্রিংকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশীদ একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান এবং সিইও আব্দুস সালাম ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাহাদ করিম।
সংগীত বিভাগে এ বছর সম্মাননা পেয়েছেন সোমনুর মনির কোনাল (সেরা গায়িকা), ইমরান মাহমুদুল (সেরা গায়ক), প্রিন্স মাহমুদ (সেরা সংগীত পরিচালক), আসিফ ইকবাল (সেরা গীতিকার) এবং জনি হক (সেরা গীতিকার সমালোচক)।
টেলিভিশন বিভাগে এ বছর সম্মাননা পেয়েছেন তানজিন তিশা (সেরা অভিনেত্রী), জিয়াউল হক পলাশ (সেরা অভিনেতা), তাসনুভা তিশা ও তানজিম সাইয়ারা তটিনি (সেরা অভিনেত্রী সমালোচক), আরশ খান (সেরা অভিনেতা সমালোচক), ইমরাউল রাফাত (সেরা পরিচালক), তপু খান (সেরা পরিচালক সমালোচক), আহমেদ তাওকীর ও অপূর্ণ রুবেল (সেরা নাট্যকার), শার্ক ট্যাঙ্ক বাংলাদেশ (সেরা ননফিকশন অনুষ্ঠান), ক্লাব ইলেভেন (সেরা ইউটিউব ড্রামা চ্যানেল) এবং চেয়েছি তোমার হতে (সেরা নাটক)।
ওটিটি বিভাগে এ বছর সেরা হয়েছেন পরীমণি (সেরা অভিনেত্রী ফিল্ম), তাসনিয়া ফারিণ (সেরা অভিনেত্রী ফিল্ম সমালোচক), সাবিলা নূর (সেরা অভিনেত্রী সিরিজ), আবদুন নূর সজল ও এফএস নাঈম (সেরা অভিনেতা সিরিজ), কাজল আরেফিন অমি (সেরা অভিনেতা) এবং অসময় (সেরা ওয়েব ফিল্ম)।
চলচ্চিত্র বিভাগে সেরা হয়েছেন শাকিব খান (সেরা অভিনেতা), মাসুমা রহমান নাবিলা (সেরা অভিনেত্রী), মেহজাবীন চৌধুরী (সেরা অভিনেত্রী সমালোচক) এবং মন্দিরা চক্রবর্তী (সেরা সম্ভাবনাময়ী অভিনেত্রী)।
এ বছর সিজেএফবি জুরি সম্মাননা পেয়েছেন শাকিল খান (চলচ্চিত্র অভিনেতা), ইশমাত আরা ইভা (সংগীতশিল্পী), শওকাত (সংগীত পরিচালক), রাইসুল তমাল (সম্ভাবনাময় টিভি পরিচালক), শিহাব আহমেদ সিরাজী (সম্ভাবনাময় চলচ্চিত্র পরিচালক), তন্নি মাহমিদ তৃনা (সম্ভাবনাময় টিভি অভিনেত্রী), একুশের চোখ (সেরা অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান), গ্লোবাল মিউজিক (সেরা সংগীতানুষ্ঠান) এবং একুশে ডিজিটাল (ডিকেড অব একুশে ডিজিটাল)।
অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন বেবী নাজনীন, আবদুন নূর সজল, ঐশী, ইমরান মাহমুদুল, সোমনুর মনির কোনাল, তানজিন তিশা, মেহজাবীন চৌধুরী, সাবিলা নূর, তাসনুভা তিশা, মন্দিরা চক্রবর্তী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন আরজে নীরব, শান্তা জাহান এবং সানজানা আইভী। কোরিওগ্রাফির দায়িত্বে ছিলেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ।
উল্লেখ্য, দেশের জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংস্কৃতিক সাংবাদিকদের স্বনামখ্যাত সংগঠন কালচারাল জার্নালিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশ-সিজেএফবি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৯ সালে। শিল্পী ও কলাকুশলীদের শিল্পকর্মের মূল্যায়নের লক্ষ্যে ২০০০ সালে কালচারাল সিজেএফবি পারফরমেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করা হয়।
এনএটি