বাছাইয়ে এগিয়ে থাকা ১০টি দলের বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে দলগুলোর দাবি দ্বিতীয় দফার তদন্তকে ভিত্তি করে এবং তৃতীয় দফার তদন্তের নামে প্রহসন না করে আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন দিতে হবে।
রোববার (১২ অক্টোবর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে এমন লিখিত দাবি জানিয়েছে দলগুলো।
তৃতীয় দফায় অধিকতর তদন্তের জন্য মাঠ পর্যায়ে যে দলগুলোর তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি, সেগুলো হলো—আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতা পার্টি বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি।
আমজনতার দলের সাধারণ সম্পাদক তারেক রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ দ্রুত ঘনিয়ে আসছে। অথচ রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রক্রিয়ার এই দীর্ঘসূত্রতা ও অনিশ্চয়তা আমাদের নেতা-কর্মী-সমর্থক এবং সাধারণ জনগণের মাঝে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। চলমান তদন্ত প্রক্রিয়াটি দ্রুত সম্পন্ন করে আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে অপেক্ষমাণ রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্য থেকে যোগ্য দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতি ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, একদলকে প্রথম তদন্তে নিবন্ধন প্রদান ও অন্যদলকে বারবার তদন্তের মুখোমুখি করা প্রশাসনিক অনিয়ম ও বৈষ্যমের শামিল। তাই কালক্ষেপণ না করে প্রথম ধাপের তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন সনদ দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
মৌলিক বাংলার সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহম্মেদ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। অনিশ্চয়তা বাড়ছে। নির্বাচন কমিশনের তৃতীয় ধাপের তদন্ত আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে সম্পন্ন করে উপযুক্ত দলগুলোকে নিবন্ধন দিতে হবে।
নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিলে ১৪৩টি আবেদন করে। তবে প্রাথমিক বাছাইয়ে কোনো দলই উত্তীর্ণ হতে না পারলে সবগুলো দলকেই ফের সময় দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে পুনঃবাছাই শেষে শর্ত পূরণ করতে না পারায় ১২১টি দলের আবেদন বাতিল করে দেয় ইসি। পরবর্তী ২২টি দলের কার্যক্রম ও অস্তিত্ব খতিয়ে দেখতে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে ইসি। সেই তদন্তের পর আরও সাতটি দলের আবেদন বাতিল করা হয়। আর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জাতীয় লীগ নামের দু’টি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এ ছাড়া একটি দলের বিষয়ে আদালতের রায় পর্যালোচনা ও দু’টি দলের সচিবালয় পর্যায়ে পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত হয়। বাকি ১০ দলের মাঠ পর্যায়ে অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, তদন্ত কার্যক্রমে সবকিছু ইতিবাচক থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে দাবি-আপত্তি চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। তখন কোনো দাবি আপত্তি এলে শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করে দেওয়া হবে নিবন্ধন সনদ।
দেশে বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগসহ নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫২টি।
ইইউডি/এমজেএফ