ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ কার্তিক ১৪৩২, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিক্ষা

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ১৫ শতাংশ, দুই দফায় কার্যকর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:৫৪, অক্টোবর ২১, ২০২৫
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ১৫ শতাংশ, দুই দফায় কার্যকর শিক্ষকরা

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া মূল বেতনের ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। তবে এই সুবিধা দুই ধাপে কার্যকর হবে।

 

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি. আর. আবরারের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।  

সভা সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১ নভেম্বর থেকে ৭.৫ শতাংশ এবং ২০২৬ সালের ১ জুলাই থেকে আরও ৭.৫ শতাংশ মিলে মোট ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, সরকারের বিদ্যমান বাজেটের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ১ নভেম্বর থেকে মূল বেতনের ৭.৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা) এবং ২০২৬ সালের ১ জুলাই থেকে উক্ত ৭.৫ শতাংশের অতিরিক্ত আরও ৭.৫ শতাংশ-অর্থাৎ মূল বেতনের সর্বমোট ১৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা) নির্ধারণ করা হলো।

শর্তসমূহ

(ক) পরবর্তী বেতনস্কেলে বর্ণিত অতিরিক্ত সুবিধাটি সমন্বয় করতে হবে;

(খ) এমপিওভুক্ত ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১’, ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)’; ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (ভোকেশনাল, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, কৃষি ডিপ্লোমা ও মৎস্য ডিপ্লোমা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)’ এবং সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে জারিকৃত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন/আদেশ/পরিপত্র/নীতিমালা অনুসরণপূর্বক নিয়োগের শর্তাদি পালন করতে হবে;

(গ) বর্ণিত বাড়িভাতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক/কর্মচারীগণ কোনো বকেয়া প্রাপ্য হবেন না;

(ঘ) ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে সকল আর্থিক বিধি-বিধান অবশ্যই পালন করতে হবে;

(ঙ) এ ভাতা সংক্রান্ত ব্যয়ে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ উক্ত অনিয়মের জন্য দায়ী থাকবেন;

(চ) প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক জিও (G.O) জারি করে জিও-এর চার কপি অর্থ বিভাগে পৃষ্ঠাঙ্কনের জন্য প্রেরণ করতে হবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী শতাংশ হারে এই ভাতা নিশ্চিত করতে পেরে একজন শিক্ষক হিসেবে তিনি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, শিক্ষকরা আরও বেশি সম্মানের দাবিদার এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে রাষ্ট্রের সচেষ্ট থাকা দরকার।

তিনি বলেন, এই পথটা সহজ ছিল না। নানা মতভেদ, বিতর্ক, অভিযোগ-সবকিছুই ছিল। কোনো বিতর্কের উত্তর না দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ক্রমাগত একটি ন্যায্য, টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে গেছে। নেপথ্যে থেকে শিক্ষা উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, উপদেষ্টা পরিষদ এবং প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাজ করেছেন যেন শিক্ষকদের দাবি শোনা হয়, বোঝা হয়।

মন্ত্রণালয় মনে করে এটি কারও একার জয় নয়। এটি যৌথ সাফল্য-শিক্ষকদের আন্দোলন আমাদের বাস্তবতা বুঝিয়েছে, সরকার দায়িত্বশীলভাবে সাড়া দিয়েছে, আর সবাই মিলে আমরা আজ এমন এক অবস্থানে এসেছি যেখানে সম্মান, সংলাপ আর সমঝোতাই জিতেছে।

এখন সময় ক্লাসে ফিরে যাওয়ার—শিক্ষার্থীদের কাছে, আমাদের আসল কাজের জায়গায়। আজকের এই সমঝোতা হোক নতুন সূচনা—পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া ও শিক্ষাকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর প্রতিশ্রুতি নিয়ে।

পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা আর গুণগত মানসম্মত শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়ে বাংলাদেশকে আমরা একটি মর্যাদাসম্পন্ন জায়গায় নিয়ে যেতে পারব।
এর আগে শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে এবং সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। গত রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মরিয়ম মিতুর সই করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

এমআইএইচ/এসআইএস
 

তবে সরকারের ওই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষকরা।

এমআইএইচ/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।