ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১ জিলকদ ১৪৪৬

শিক্ষা

ববির রেজিস্ট্রারের কক্ষ-দপ্তরে তালা, শিক্ষার্থীদের নামে জিডি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০৮, এপ্রিল ২৮, ২০২৫
ববির রেজিস্ট্রারের কক্ষ-দপ্তরে তালা, শিক্ষার্থীদের নামে জিডি

বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) রেজিস্ট্রারের কক্ষসহ দপ্তরের সব কক্ষে শিক্ষার্থীদের তালাবদ্ধ করার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।  

রোববার (২৭ এপ্রিল) রাতে বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানায় জিডি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সানোয়ার পারভেজ লিটন।

 

এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, থানায় জিডি করার জন্য লিখিত দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জিডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিন খান, মিজানুর রহমান, তরিকুল ইসলাম ও এনামুল হক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নাজমুল ঢালী, লোকপ্রশাসন বিভাগের মোকাব্বেল শেখ, আইন বিভাগের তরিক হোসেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এমডি শিহাব, কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের স্বপ্নীল অপূর্ব রকি এবং রসায়ন বিভাগের রফিকের নাম রয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০/১২ জন রয়েছে।


সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করাসহ অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে বেড়ায়। তারা দলবল নিয়ে চলাচল করায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভয়ে থাকে।
এ ছাড়াও অভিযুক্তরা বল প্রয়োগের মধ্য দিয়ে প্রশাসনিক কাজে বাধাগ্রস্ত করছে। এমনকি প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভিন্ন দাবি জানিয়ে ফেস্টুন নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের তিনতলায় উঠে মাইকে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত করে। এছাড়াও তারা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে ঢুকে বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যালয় থেকে বের করে দেয়। পরে তারা রেজিস্ট্রারের কক্ষসহ অন্যান্য রুমে তালা দিয়ে ভবনের মূল গেট আটকে দেয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কণ্ঠরোধ করতে জিডি এবং মামলার ভয় দেখাচ্ছে।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের একজন এমডি শিহাব বলেন, যৌক্তিক আন্দোলনকে দমন করতে ও শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখাতে সাধারণ ডায়েরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এমন কাজের তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

সাধারণ শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, হামলা মামলা দিয়ে শিক্ষার্থীদের দমন করা যাবে না। স্বৈরাচারী হাসিনা যেভাবে হামলা-মামলা দিয়ে বিরোধী মতকে অন্যায়ভাবে দমন করতে চেয়েছিল। ঠিক একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও সেই কাজই করছে।

শিক্ষার্থী রাকিন খান বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলেও এমন যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা মামলা দিয়ে আন্দোলন দমন করা হতো। এখন উপাচার্য আন্দোলন দমন করতে ফ্যাসিবাদের ন্যায় মামলা দিয়ে যৌক্তিক আন্দোলন দমন করতে চায়। এসব করে উপাচার্য ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের পথ সুগম করতে চায়। যা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটিতে করতে দেওয়া হবে না। মিথ্যা মামলা জিডি করে যৌক্তিক আন্দোলন থামানো যাবে না।

এর আগে উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভেঙে ফেলার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে একই থানায় একই কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি মামলাও করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সানোয়ার পারভেজ লিটন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী, রেজিস্ট্রারের রুমে তালাবদ্ধ করে। এ কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে জিডি করা হয়েছে। ওপর থেকে যে নির্দেশ দেওয়া হয় সেটাই আমার করতে হয়। এর আগেও মামলা ওপরের নির্দেশে করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. সনিয়া খান সনি বলেন, বিষয়টি সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে শুনেছি। আমি কিছু জানি না।  

এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।