চট্টগ্রাম: বোয়ালখালীর আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজল দে এর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. মুজাহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান কাজল দে প্রাচীনতম ধোরলা-কানুনগোপাড়া আরবাণ কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড এর গ্রাহকদের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং কো-অপারেটিভ ব্যাংকের বিশাল আকারের একটি পুকুরে মাছ চাষ করে লাখ লাখ টাকাও আত্মসাৎ করেছেন।
অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, দীর্ঘ ১৫ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালীন অবস্থায় পরিষদের সদস্যদের ইউনিয়ন পরিষদ সম্মানী ভাতা তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেছেন।
৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু জাফর তালুকদার বলেন, কাজল চেয়ারম্যান আমাকেসহ সব ইউপি সদস্যদের সম্মানী ভাতা আমাদের না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন।
৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পংকজ চন্দ্র বলেন, কাজল দে ইউনিয়নের মানুষের জন্য বরাদ্দ সরকারি ভাতা, চাল ও অন্যান্য সরকারি বরাদ্দ তার নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদের বন্টন করতেন। আমাদেরকে সম্পৃক্ত করতেন না। আমি এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার ওপর হামলা চালিয়ে আমাকে চুরিকাঘাত করেন।
সাবেক ইউপি সদস্য শিক্ষক রণজিৎ কুমার দে বলেন, কাজল দে দীর্ঘদিন ধরে অফিস করেন না। ফলে, ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। জনসাধারণ তাদের নাগরিক অধিকার ও সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অতিসত্বর প্রশাসক নিয়োগ দিলে আমুচিয়া ইউনিয়নের জনসাধারণের দুর্ভোগ কমবে।
গত ২০ অক্টোবর সকালে চেয়ারম্যান কাজল দে এর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কানিজ ফাতেমা। এ সময় কাজল চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন না। সেবাবঞ্চিত শতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ ফাতেমাকে তাদের ওপর দীর্ঘ ১৫ বছর কাজল দে’র চালানো জুলুম এর কথা বলেন এবং দ্রুত প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা এসকান্দর মিয়া বলেন, তিনি একটি ওয়ারিশান সনদ নিতে গেলে তাকে চেয়ারম্যান কাজল বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন। তিনি বিষয়টি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করলে ইউএনও নির্দেশে আমাকে ওয়ারিশান সনদ দেন।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, ধোরলা-কানুনগোপাড়া আরবাণ কো-অপারেটিভ সোসাইটি ব্যাংক এর বিভিন্ন গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে বেরিয়ে আসে ৪৪-৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
অভিযোগকারী মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, কাজল দে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক থাকায় ইউনিয়নের বিভিন্ন কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ফলে আইন-শৃঙ্খলা সহ সার্বিক কল্যাণে একজন দক্ষ প্রশাসক নিয়োগ দিলে ইউনিয়নবাসী নাগরিক সেবা পাবে।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান কাজল দে এর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায় এবং পরিষদে গেলে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাবলা বড়ুয়া বলেন, চেয়ারম্যান ৫ আগস্ট পর থেকে পরিষদ আসেনি। তিনি বর্তমানে কোথায় আছে জানি না।
পিডি/টিসি