ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৭ সফর ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সভা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৯, আগস্ট ২২, ২০২৫
চট্টগ্রামে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সভা ...

চট্টগ্রাম: বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, সরকার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে। দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যে যতগুলো দেশের সাথে সংযুক্ত হওয়া সম্ভব ততগুলো দেশের সাথে আমরা সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছি।

প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানো হবে।  

শুক্রবার (২২ আগস্ট) নগরের আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের হল রুমে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত ‘মিটিং উইথ জাম কামাল খান ও শেখ বশিরউদ্দীন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।

 

পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান বলেন, আমরা দুদেশের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী যার মধ্য দিয়ে দুদেশের মানুষের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। আমরা আমাদের চ্যালেঞ্জ জানি, এবার আমাদের সামনে এগোতে হবে।

তিনি বলেন, দুদেশের মানুষ একে অপরকে জানে, একে অপরের সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত। আমরা যদি একটি সঠিক ব্যবসায়িক রোডম্যাপ তৈরি করতে পারি তাহলে অবশ্যই ব্যবসায় বাণিজ্য অগ্রগতি হবে। তবে এর জন্য জয়েন্ট ভেঞ্চার কোলাবরেশন বাড়াতে হবে।

গ্লোবাল ইকোনমিক ট্রেন্ড দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখ করে মি. কামাল খান বলেন, আমাদের সামনে  সুযোগ এসেছে বাণিজ্য বাড়ানোর।  

এ সময় তিনি বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং, লেদার, ফুটওয়্যার, ফার্মাসিউটিক্যালস, গার্মেন্টস প্রভৃতি খাতের বাণিজ্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা আগামী দুবছরের জন্য একটি বাণিজ্য রোডম্যাপ তৈরি করব। এর জন্য জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে। শুধু সরকারের সাথে সরকার নয়- দুদেশের ব্যবসায়ীরা যেন পারস্পরিক সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি করতে পারে সে বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।  

দুদেশের এভিয়েশন অথরিটি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল সুবিধা চালু করতে পারে বলে এ সময় তিনি উল্লেখ করেন।

চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ডাব্লিওউটিও) ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, পাকিস্তান হাইকমিশনের ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট অ্যাটাচে জাইন আজিজ , সিসিসিআইর সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এমএ সালাম, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এরশাদ উল্লাহ, বাংলাদেশ স্টিল রি রোলিং মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আলী হোসাইন আকবর আলী, পান রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. একরামুল করিম চৌধুরী, চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেন চৌধুরী, বিজিএমইএ পরিচালক মো. এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, বাফার সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী (মিজান) ও প্রান্তিক গ্রুপের এমডি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সরওয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন।  

উপস্থিত ছিলেন চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী, প্রাইভেট হসপিটালস অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. একেএম ফজলুল হক, খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবদুস সালাম, বিকডার পরিচালক মো. শাহ আলম, টিকে গ্রুপের পরিচালক জাফর আলম, লুব-রেফের এমডি মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বিজনেস ফোরামের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কামরুল হুদা, উইম্যান চেম্বারের সাবেক সহ-সভাপতি আইভি হাসান, মেরিডিয়ান গ্রুপের পরিচালক আকিব কামাল প্রমুখ।

ব্যবসায়ী নেতারা চট্টগ্রামের সাথে করাচির সরাসরি বিমান পরিবহন ও সামুদ্রিক জাহাজে পণ্য পরিবহন চালু করা এবং শিপ বিল্ডিং খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির আহবান জানান। এর মাধ্যমে দুদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী হবে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা বিক্রয় প্রবৃদ্ধি এবং প্রতিযোগিতা মূল্যে আমদানি করার লক্ষ্যে কাজ করছি। আমার পাকিস্তানি প্রতিপক্ষের সাথে সুন্দর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমদানি এবং রপ্তানি উভয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করাসহ যেসব খাতের কথা তিনি উল্লেখ করলেন এর বাইরেও নানা খাত নিয়ে আমরা কাজ করছি।  

তিনি বলেন, সব ব্যবসায়ীর সামগ্রিক শক্তিতে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি আরো উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।  

স্বাগত বক্তব্যে চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, দুদেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য সম্পর্ক থাকলেও পাকিস্তান থেকে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য আমদানির বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি মাত্র ৫৮ মিলিয়ন ডলার। তবে সাফটা এবং ডি-৮ পিটিএ কার্যকর করার পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে ননট্যারিফ বাধা হ্রাস করা, বিটুবি সংযোগ উৎসাহিত করার মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ আকর্ষণ সম্ভব।  

তিনি প্রচলিত পোশাক শিল্পের বাইরে ফার্মাসিউটিক্যাল ও হেলথকেয়ার প্রোডাক্ট, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি ও ডিজিটাল সেবা, লাইট ইঞ্জিনিয়াারিং ও শিপবিল্ডিং, অ্যাগ্রো ও ফুড প্রসেসিং খাতে বিনিয়োগ ও সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে মত দেন।  

পরে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী সীতাকুণ্ডের কবির শিপ রি-সাইক্লিং ইয়ার্ড পরিদর্শন ও মতবিনিময় করেন।

এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।