ঢাকা, রবিবার, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৭ মহররম ১৪৪৭

বসুন্ধরা শুভসংঘ

পর্যটনশিল্পের টেকসই উন্নয়ন-সুরক্ষায় বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে সভা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৫৮, জুলাই ১১, ২০২৫
পর্যটনশিল্পের টেকসই উন্নয়ন-সুরক্ষায় বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে সভা আলোচনা সভায় অতিথিরা।

পাথরঘাটা (বরগুনা): পূর্বে বিষখালী, পশ্চিমে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন সংলগ্ন বলেশ্বর নদী আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। যার মধ্যবর্তী উপজেলা পাথরঘাটা।

যেখানে রয়েছে দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। যে কেন্দ্রকে ঘিরে অর্থনীতির চাকা ঘুরে।

পাশপাশি পাথরঘাটার চারদিকেই রয়েছে সবুজ বনায়নসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। রয়েছে নানা নামে পর্যটনকেন্দ্র।

এখানে হরিণঘাটা পর্যটনকেন্দ্র, লালদিয়ার চর, মিনি সুন্দরবন, বিহঙ্গ দ্বীপ, নীলিমা পয়েন্ট, কালমেঘা পর্যটন কেন্দ্র (টুলু পয়েন্ট)এবং শুটকি পল্লীর মতো বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত হওয়ায় পাথরঘাটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর।

পাথরঘাটা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদী, বন এবং উপকূলীয় অঞ্চলের কারণে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।

এ পর্যটন কেন্দ্রগুলোর উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, নিরাপত্তা জোরদার, যাতায়াতের সুযোগ সুবিধা, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নানা পদক্ষেপ নিতে ‘পাথরঘাটা পর্যটন সম্ভাবনা, সংকট ও সমাধান’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চতুর্থ তলায় সেমিনার কক্ষে বসুন্ধরা শুভসংঘের পাথরঘাটা উপজেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মহসিন হোসেন, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নজমুল হক সেলিম, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু সালেহ জসিম, পাথরঘাটা মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাকির হোসেন খান, শুভসংঘের উপদেষ্টা মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ, শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী শিকদারসহ পর্যটন উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মেহেদী শিকদার বলেন, পাথরঘাটার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন নেই‌ বললেই চলে।

দূর থেকে পর্যটকরা‌ আসলেও সড়কে সড়কে সাইনবোর্ড না থাকায় পর্যটকদের সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়াও সড়ক সরু থাকায় দূর থেকে পরিবহন যাতায়তে বাধাগ্রস্ত হয়। সড়কগুলো প্রসস্ত করার দাবি করেন তিনি।

জাকির হোসেন খান বলেন, পাথরঘাটা পর্যটন স্পট রয়েছে অনেকগুলো। কিন্তু সেগুলো সংরক্ষণ করার কোন পদক্ষেপ দেখা যায় না।

পাথরঘাটার পর্যটন কেন্দ্রগুলো সুরক্ষার জন্য একটি কমিটি থাকা দরকার।

পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নজমুল হক সেলিম বলেন, পর্যটন কেন্দ্রগুলো অরক্ষিত। পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের জন্য নিরাপদ করার ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দরকার। তা নাহলে দিনদিন পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাবে।  

উন্নয়নকর্মী অভিজিৎ মজুমদার রতন বলেন, পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে যত্রতত্র প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো ফেলা হচ্ছে। ডাস্টবিন তৈরি করার ক্ষেত্রে জোর দাবি জানান তিনি।  

ইমাম হোসেন নাহিদ বলেন, নীলিমা পয়েন্টে নির্ধারিত একটি মঞ্চ দরকার। যেখানে পর্যটকরা এসে বিনোদন করতে পারে।

এছাড়াও পর্যটকদের জন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত আলো, নিরাপদ পানি, টয়লেট ব্যবস্থা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা।

শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, উপকূলের মানুষের জীবনজীবিকা নির্ভর করে পযর্টন এবং মৎস্যখাতে। দুটোই সমান তালে উন্নয়ন দরকার। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তা তৈরি করা দরকার। টেকসই উন্নয়ন করতে হলে পর্যটন খাতকেও এগিয়ে নিতে হবে। তাছাড়া পর্যটন কেন্দ্রগুলো সুরক্ষিত রাখতে স্থানীয়দের এগিয়ে আসতে হবে, নিজের জীবিকা  নির্বাহের জন্য এবং সৌন্দর্যের জন্য আন্তরিকতার বিকল্প নেই।  

প্রধান অতিথি ইউএনও মিজানুর রহমান বলেন, আমি এসেছি কম সময়। তারপরও পাথরঘাটার পর্যটন কেন্দ্রগুলোর কারণে মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভর করে। পর্যটন শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকমের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বসুন্ধরা শুভসংঘ এর সর্বশেষ