জামিনের পর ধার্য তারিখে হাজির হননি সিলেটে বহুল আলোচিত রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি বরখা করা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভুঁইয়া।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট বদরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, জামিনপ্রাপ্ত আসামি আকবর আজ ধার্য তারিখে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত হননি।
তিনি বলেন, মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে। তাই ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ধার্য তারিখে শুনানি করেন। যদিও মামলার পরবর্তী তারিখ পড়েছে ১৪ সেপ্টেম্বর। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ওইদিন হাজির না হলে ওয়ারেন্টইস্যু করা হবে। এ ছাড়া ইতোমধ্যে সরকার পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে।
এদিকে গুঞ্জন রয়েছে রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া জামিনে গিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আকবর ভারতে পালিয়ে গেছেন এবং সেখান থেকে পাসপোর্ট করিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া করছেন।
এর আগে উচ্চ আদালত থেকে আশুগঞ্জের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি চাউর হলেও এর কোনো সদস্য পাওয়া যায়নি জানায় এসএমপি পুলিশ।
৪ আগস্ট উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে ১০ আগস্ট সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন আকবর। তবে দেশব্যাপী তীব্র সমালোচনা ও বিতর্কের পর চেম্বার জজ আদালত তার জামিন বাতিল করা হয়।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাতে রায়হান উদ্দিনকে তুলে নিয়ে সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। গুরুতর অবস্থায় পরদিন ১১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৭টায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রায়হান।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন মানুষ। রায়হানের পরিবার অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়েছে এবং পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন রায়হানের স্ত্রী।
তদন্তে মহানগর পুলিশের গঠিত কমিটি ফাঁড়িতে নির্যাতনের সত্যতা পায়। পরবর্তীতে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।
এ ঘটনায় কনস্টেবল হারুনসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৫ মে পিবিআই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এতে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান আসামি করা হয়।
অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) আসামিরা হলেন, কোতোয়ালি থানার প্রাক্তন বন্দরবাজার ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস, সাময়িক বরখাস্ত এসআই হাসান উদ্দিন এবং আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জের সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।
এনইউ/এএটি