জার্মান সরকার নতুন সামরিক সেবা আইন অনুমোদন করেছে। আইনটিতে শুরুতে তরুণদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ স্বেচ্ছাশ্রমভিত্তিক হলেও প্রয়োজনে তা বাধ্যতামূলক করা হবে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) জার্মানির মন্ত্রিসভায় আইনটি পাস হয়েছে। জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস আইনটির খসড়া অনুমোদনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্স বলেন, নতুন আইনের ফলে বিপুল সংখ্যক তরুণকে জার্মান সেনাবাহিনীতে আনা সম্ভব হবে।
তবে তিনি আরও জানান, খসড়া আইনে এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে- যদি স্বেচ্ছামূলকভাবে তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণে না পাওয়া যায়, তাহলে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ চালু করা হবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, এটি একটি বিশাল অগ্রগতি। সমাজে বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। প্রত্যেককেই ঠিক করতে হবে, তারা দেশের নিরাপত্তায় কী অবদান রাখতে চান।
বর্তমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও রাশিয়ার আগ্রাসনের কথা উল্লেখ করে পিস্টোরিয়াস বলেন, আমরা একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে চাই। যেখানে যথেষ্ট জনবল ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র থাকবে। তাহলেই কেবল শত্রুকে যুদ্ধে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সেনাবাহিনীকে বড় করার পরিকল্পনা
ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতি মাথায় রেখে জার্মান মন্ত্রিসভা নতুন এ আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে জার্মান সেনাবাহিনীতে প্রায় এক লাখ ৮২ হাজার সৈন্য রয়েছেন। তবে ন্যাটোর দায়িত্ব পালন এবং দেশের প্রতিরক্ষা জোরদারে দেশটির আরও বেশি সৈন্য প্রয়োজন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে জার্মান সেনাবাহিনীর সদস্য দুই লাখ ৬০ হাজারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি রিজার্ভ ফোর্স প্রায় দুই লাখ করা হবে।
যে পরিবর্তন আসছে নতুন আইনে
আগামী বছর ২০২৬ সাল থেকে ১৮ বছর বয়সী প্রত্যেককে অনলাইনে সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে। ছেলেদের জন্য এটি বাধ্যতামূলক, মেয়েদের জন্য ঐচ্ছিক।
উপযুক্ত প্রার্থীদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য ডাকা হবে। ২০২৭ সালের ১ জুলাই থেকে ছেলেদের জন্য সামরিক ফিটনেস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হবে। এটি শুরুতে স্বেচ্ছামূলক থাকবে, তবে সংসদের অনুমোদন পেলে তা বাধ্যতামূলক করা হবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, আশা করছি, নতুন আইনের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে পর্যাপ্ত জনবল পাওয়া যাবে। এক দশকের মধ্যে অতিরিক্ত এক লাখের বেশি তরুণ প্রশিক্ষণ নিয়ে রিজার্ভ ফোর্সে যুক্ত হবেন। তবে প্রয়োজন হলে আংশিকভাবে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ চালু করা হবে।
এসআই