ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ কার্তিক ১৪৩২, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

রাজনীতি

কয়েকজন উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে বিভ্রান্ত করছে: জামায়াত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:২৬, অক্টোবর ২৩, ২০২৫
কয়েকজন উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে বিভ্রান্ত করছে: জামায়াত সংগৃহীত ছবি

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও প্রশাসনের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কর্মকর্তা একটি দলের আনুগত্য করছে বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। একই সঙ্গে কয়েকজন উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিভ্রান্ত করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

কোনো দলের নাম উল্লেখ না করলেও বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে জামায়াত নেতা ডা. তাহের বলেন, আপনারা জানেন ইলেকশন কমিশনে, সচিবালয়ে, পুলিশ প্রশাসনে আজকে সেখানে প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ অফিসারই একটি দলের আনুগত্য করছে, তাদের মাধ্যমে নিয়োগ হচ্ছে। আমরা গেলে তারা বলেন, প্রচণ্ড চাপ। তো চাপ কোথা থেকে? একটি দল থেকে আসছে। পুলিশেও একই অবস্থা।

তিনি বলেন, প্রসিকিউটর (পিপি) যারা হয়। ৮০ শতাংশ একটি বিশেষ দলের। অবশ্য ওনাদের কেউ বলেছেন যে এটা ৮০ না, ৬৫ শতাংশ। তো ৬৫ শতাংশও যদি হয়, তাহলে তো অনেক বেশি হয়ে গেলো। একটা দল ৬৫, আর সারা বাংলাদেশ ৩৫; ইমব্যালেন্স হয়ে আছে।

নির্বাচনের আগে প্রধান উপদেষ্টাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির অনুরোধ করা হয়েছে জানিয়ে জামায়াতের এ নেতা বলেন, আমরা বলেছি আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের মতো আছেন, নিরপেক্ষ সরকার, আপনি এটাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করেন। সবার জন্য সমতল ভূমি তৈরি করেন এবং নির্বাচনের আগে যেখানে যেখানে রদবদল করা দরকার, আপনি রদবদল করেন।

ডা. তাহের বলেন, সেক্ষেত্রে উনি (প্রধান উপদেষ্টা) আমাদের বলেছেন, উনি নিজে এটা তত্ত্বাবধান করবেন এবং লটারি সিস্টেমে উনি পোস্টিং ঠিক করবেন। আমরা বলেছি, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আপনি লটারি টানেন। তবে লটারির পেছনে কোনো একটা ভূত যেন দাঁড়াইয়া না থাকে, এটা দেখতে হবে।

নোয়াখালীতে শিবিরের একটি মিটিংয়ে হামলার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। কবিরহাট নামে নোয়াখালীর একটা জায়গায় ছাত্রশিবিরের একটা মিটিং হচ্ছিল, সেখানে বিএনপির লোকেরা প্রকাশ্যে হামলা করেছে। ... আমরা প্রধান উপদেষ্টার দৃর্ষ্টি আকর্ষণ করেছি, এ রকম যদি এখনই শুরু হয়, তাহলে নির্বাচন কি হবে, মর্নিং শোজ দ্য ডে। ওনারা এখনই শুরু করেছেন। আমরা বলেছি, আপনি এটা থামান। এটা থামাতে না পারলে নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।

সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা একটি দলের হয়ে কাজ করছেন অভিযোগ করে জামায়াতের এ শীর্ষ নেতা বলেন, সরকারের যারা উপদেষ্টা আছে, তাদের ব্যাপারে (প্রধান উপদেষ্টাকে) বলেছি, সবার ব্যাপারে নয়। আমরা বলেছি, কিছু কিছু লোক (উপদেষ্টা) আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) বিভ্রান্ত করে। আপনার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু আপনার কিছু লোক, আপনার পাশে আপনাকে বিভ্রান্ত করে। তারা কোনো একটা দলের পক্ষে কাজ করে। আমরা মনে করি, তাদের ব্যাপারে আপনার হুঁশিয়ার থাকা দরকার। সচেতন থাকা দরকার।

ডা. তাহের বলেন, আমরা তাদের (উপদেষ্টাদের) অপসারণ চাইনি। দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আপনাকেও সুযোগ দিচ্ছি। যদি না হয়, তাহলে আমরা যা যা করণীয় সে ব্যাপারে চিন্তা করব।

ব্রিফিংয়ের আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের চার সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। অন্য সদস্যরা হলেন- জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ. টি. এম. মাছুম এবং রফিকুল ইসলাম খান।  

বৈঠকে উপদেষ্টাদের মধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান সরকারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতে ইসলামীর আগে বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এনসিপির প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

এমইউএম/টিএ/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।